বৃহস্পতিবার দিনভর সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে ছিল কল্যাণ-কুণাল তরজা।সদ্যই, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যক্তিগত মতামত’-এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ছাড়া আর কাউকে তিনি নেতা মানেন না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্ব প্রমাণ হয়নি বলেই দাবি করেছেন তৃণমূলের চিফ হুইপ।
আর সেই ইস্যুতে কল্যাণের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। দুজনেই নিজস্ব অবস্থানে অনড় থেকে বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। আর এবার বিতর্ক থামাতে আসরে নামলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, শুক্রবার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষ দুজনকেই ফোন করেছেন তিনি।পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘কারোরই এমন কোনও মন্তব্য করা উচিৎ নয়, যাতে দল এবং সরকার অস্বস্তিতে পড়ে।’
শুক্রবার কুণাল ঘোষ টুইটারে লেখেন, ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’। সঙ্গে একটি হাসির ইমোজি দেন তিনি। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজিয়ায় ইতি টানলেন বলেই মনে করা হয়। তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছে বলেই কুণাল বিতর্ক থেকে সরে আসেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মিটিং চলাকালীন উপাচার্যকে ‘গালি’, বিশ্বভারতীর অনলাইন বৈঠকে বিড়ম্বনা
তবে সাংবাদিক সম্মেলনে ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’ কথাটির ব্যাখ্যা দেন কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, “আমি কোভিড পজিটিভ ছিলাম। ডাক্তাররা বললেন সুস্থ আছি। তাই লিখেছি চ্যাপ্টার ক্লোজড।”
তবে তরজা যে শেষ হয়নি সেটাও বোঝা যায় এ দিনই। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ফেসবুকে কবি শ্রীজাতর কবিতার লাইন উদ্ধৃত করেন। ‘মানুষ থেকেই মানুষ আসে, বিরুদ্ধতার ভিড় বাড়ায়, আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়’, কল্যাণের এই টুইটের পরই পাল্টা টুইট করেন কুণাল। তনু দত্তের ‘শিরদাঁড়া’ কবিতাটি পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। তা থেকেই স্পষ্ট হয়, কাজিয়া এখনও বহাল।
দলীয় সাংসদদের উদ্দেশ্যে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee)। সূত্রের খবর, তৃণমূলের বেশ কিছু সাংসদ কল্যাণের বিরুদ্ধে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানোর উদ্যোগ নেন। সেই বিষয়টি সুদীপবাবুর নজরে আসতেই তিনি সব সাংসদকেই এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেন। হোয়াটস্যাপে একটি সতর্কবার্তাও পাঠানো হয়। তাতে স্পষ্ট বলা হয়, ‘প্রকাশ্যে মুখ খুলে তাতে বিতর্ক তৈরি করা যাবে না।’ পাশাপাশি আরও বলা হয়, দলের অন্দরের বিরোধ দলেই মেটাতে হবে।
তাই নেটমাধ্যমেও যাতে কোনও নেতা কারও বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য না করেন, সে বিষয়েও ওই নেতাদের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বলেই খবর। কারণ, অভিষেককে সমর্থনের প্রশ্নে নেটমাধ্যমে পরস্পরের বিরুদ্ধে তরজায় জড়িয়ে পড়ছেন নিচুতলার নেতা- কর্মীরাও। সেই প্রবণতা রুখতেই দ্রুত এ বিষয়ে রাশ টানতে চান তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: বাংলায় এবার ‘দুয়ারে পিঠে’, অর্ডার দিলেই বাড়িতে আসবে দুধ পুলি-পাটিসাপটা