রাজ্যের বকেয়া ১০৮টি পুরসভার ভোটে তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা (TMC Candidate List) নিয়ে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি। দলের তরফে দাবি, ভুয়ো লিস্ট ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। প্রার্থীতালিকা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের তা বদল করা হয়। সূত্রের খবর, মাত্র ২০ শতাংশ বদল করা হয়েছে নতুন প্রার্থীতালিকায়। ইতিমধ্যেই তা জেলায় জেলায় পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বকেয়া ১০৮টি পুরসভার ভোটে শুক্রবার বিকেল নাগাদ প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, নবীন ও প্রবীণের ভারসাম্য রেখে প্রার্থিতালিকা তৈরি হয়েছে। তবে কোনও বিধায়ককে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। শুধু তাাই নয়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কঠোর ভাবে মেনে চলছে তৃণমূল। পাশাপাশি, পরিবারতন্ত্রের উপরেও রাশ টেনেছে তারা।
কিন্তু প্রার্থিতালিকায় ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি এবং পরিবারতন্ত্রে রাশ টানার বিষয়টিতে বেশ কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায়। সেই তালিকায় মহেশতলা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী করা হয়েছে মহেশতলার বিধায়ক দুলাল দাসকে। প্রসঙ্গত, এর আগে দুলাল ওই পুরসভারই ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতেন। এ বার তাঁকে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বীরভূমের বোলপুর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বস্ত্রশিল্প দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের স্ত্রী কুন্তলা সিংহকে। গত পুরভোটেও প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। আবার রামপুরহাট পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে দম্পতি সৌমেন ভগৎ এবং মীনাক্ষী ভগৎ-কে। যা নিয়েও বিতর্ক হয়।
আরও পড়ুন: বছরে ৬,০০০ ইন্টার্ন নেবে রাজ্য, ভাতা মিলবে ৫০০০ টাকা, জানুন যোগ্যতা
এই প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধার মাঝেই আবহে তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এই তালিকা বদলাতে পারে। বস্তুত, যে তালিকা শুক্রবার প্রকাশ করা হয়েছে, সেই তালিকাটি নাকি ‘চূড়ান্ত’ নয়।তাতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন ছিল না। তালিকা প্রকাশের পরই জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, প্রার্থীতালিকা পছন্দ না হওয়ায় বিক্ষোভ। তা নজরে আসে তৃণমূল নেতৃত্বেরও।
সূত্রের খবর, এরপরই বৈঠকে বসে তৃণমূল নেতৃত্ব। বৈঠকের পর তৃণমূল নেতৃত্ব জানায়, দু’রকমের প্রার্থীতালিকা ভাইরাল হয়েছে। একটি তালিকায় দলের শীর্ষনেতৃত্বের কারও সই নেই। ভাইরাল অপর প্রার্থী তালিকায় সই রয়েছে ঠিকই। তবে তাতে নেই কোনও তারিখের উল্লেখ। এই দুই তালিকাই ভুয়ো বলে জানানো হয়েছে। শাসক শিবিরের দাবি, “শীর্ষ নেতৃত্বের সই করা প্রকৃত তালিকা বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে।” তবে কীভাবে ভুয়ো তালিকা ভাইরাল হল, তা শাসক শিবিরের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়ার উলুবেড়িয়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, বীরভূমের মোট ১০৮টি পুরসভায় ভোট। ৯ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন জমার শেষ দিন। ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা যাবে মনোনয়ন প্রত্যাহার। কবে ফলপ্রকাশ হবে তা এখনও ঘোষণা হয়নি।
আরও পড়ুন: Viral Video: বর্ধমানের নবাবহাটে যাত্রী-সহ গাড়ি পড়ল পুকুরে, অল্পের জন্য রক্ষা অ্যাম্বুল্যান্সের!