অবশেষে ঘোষণা হল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর নাম। এই আসনে লড়াই করবেন সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। বঙ্গে প্রচারে এসে তাঁর নাম ঘোষণা করলেন অমিত শাহ।
আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। তাঁর বিরুদ্ধে জয় পেতে মরিয়া বিজেপি। তাই ভূমিপুত্র আলুওয়ালির উপরেই আস্থা রেখেছে গেরুয়া শিবির। প্রথমবার দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন তিনি। জয়ও পেয়েছিলেন। হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দ্বিতীয়বার বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসন টিকিট দেওয়া হয় তাঁকে। সেবারও জেতেন আলুওয়ালিয়া। এবার ওই লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়ছেন দিলীপ ঘোষ। তৃতীয়বারও বাংলা থেকে লোকসভা নির্বাচনের টিকিট পেলেন আলুওয়ালিয়া। এবার আসানসোল কেন্দ্র থেকে টিকিট পেলেন।
প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পরে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় অহলুওয়ালিয়া বলেছেন, “এই মাত্র জেনেছি। প্রার্থীর তালিকা দেখেই জানলাম। বৃহস্পতিবারেই আসানসোল যাচ্ছি।” সুরেন্দ্রের ‘সুবিধা’ বলতে তিনি যেমন আসানসোলের ‘ভূমিপুত্র’, তেমনই অবাঙালি। কিন্তু বাংলাও ঝরঝরে বলতে পারেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, আসানসোল উপনির্বাচনে রেকর্ড ব্যবধানে জেতা শত্রুঘ্নের মোকাবিলা করতে পারবেন সুরেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, আসনসোল আসনের প্রার্থী নিয়ে বিজেপি প্রথম থেকেই ‘বেকায়দায়’ ছিল। প্রথমে নাম ঘোষণা করা হয়েছিল ভোজপুরি গায়ক-অভিনেতা পবন সিং -এর। কিন্তু তৃণমূলের আইটি সেলের কড়া আক্রমণের মুখে তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজেকে ভোটের লড়াই থেকে সরিয়ে নেন। তার পরে ওই আসনে এলাকার ‘দাপুটে’ নেতা তথা পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক আগে তাঁর সঙ্গে এনআইএ-র এক শীর্ষ অফিসারের বৈঠকের ঘটনা ‘নথিপত্র’ সহযোগে প্রকাশ্যে আনে তৃণমূল। তার পরেই ওই অফিসারকে তলব করে দিল্লি। তাঁর বদলে পটনায় কর্মরত এক অফিসারকে নিয়োগ করা হয়। পাশাপাশিই, আসানসোল আসনে জিতেন্দ্রের সম্ভাবনা কমতে থাকে। কারণ, শাসক তৃণমূল অভিযোগ করেছিল, জিতেন্দ্র একটা ‘সাদা প্যাকেট’ নিয়ে ওই বৈঠকে ঢুকেছিলেন। বেরোনোর সময় তাঁর হাত ছিল খালি। ইঙ্গিত খুব স্পষ্ট ছিল। সে ইঙ্গিত বা অভিযোগ সত্য না মিথ্যা, তা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু তাতে যে জিতেন্দ্রের সম্ভাবনা নষ্ট হচ্ছিল, তা বিজেপির রাজ্য নেতারাও মেনে নিচ্ছিলেন। কার্যক্ষেত্রেও দেখা গেল তা-ই। জিতেন্দ্র নয়, আসানসোলে প্রার্থী করা হল সুরেন্দ্রকে।
আসানসোলে সুরেন্দ্রের নাম ঘোষণার পরে রাজ্যে বিজেপির মাত্র একটি আসনেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা বাকি রইল— ডায়মন্ড হারবার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি কাকে প্রার্থী করবে, তা নিয়েই আপাতত কৌতূহল বাড়ছে।