ফের রক্তাক্ত নাইজেরিয়া (Nigeria)। লাগাতার দুষ্কৃতী হামলায় উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ায় মৃত্যু হল অন্তত ২০০ জনের। এখনও নিখোঁজ বহু। সপ্তাহের শুরুতেই দুষ্কৃতীদের ঘাঁটির দখল নিয়েছিল সেনা-পুলিশ। তারই প্রত্যাঘাত হিসেবে নিরীহ গ্রামবাসীদের হত্যা করল দুষ্কৃতীরা।
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে ডাকাত দল দীর্ঘদিন ধরে গ্রামগুলিতে হানা দিয়ে লুটতরাজ, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে আসছিল কিন্তু হিংসা এখন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি সরকার এক দশকেরও বেশি সময় ধরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই অপরাধীদের দমন করার জন্য লড়াই করছে।
বুধবার প্রকাশিত এক সরকারি গেজেটে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার বন্দুকধারী ডাকাত অর্থাত্ হাউসা ভাষায় যাদের ইয়ান বিন্দিগা এবং ইয়ান তা’আদ্দার বলা হয় তাদের কার্যকলাপকে “সন্ত্রাসবাদ ও অবৈধ কাজ” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। উল্লেখ করা হয়েছে যারা স্কুলের শিক্ষার্থীদের গণহারে অপহরণ, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ, গবাদি পশু চুরি এবং সম্পত্তি বিনষ্টসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
আরও পড়ুন: মায়ানমার : বিবিসির অনুসন্ধানে মিলল গণহত্যার ভয়ঙ্কর তথ্য
জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ডাকাতদের যারা তথ্য প্রদান করে এবং সমর্থন যোগায় যেমন যারা ডাকাতদের জ্বালানি এবং খাবার সরবরাহ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে তাদের বিরুদ্ধে নাইজেরিয়ার সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ আইনের অধীনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
সূত্রের খবর, জানুয়ারির শুরু থেকে দস্যুদের ঘাঁটি দখলের লড়াই চলছিল। আকাশপথে সে সমস্ত এলাকায় হামলা চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। সেই হামলায় একাধিক দুষ্কৃতীকে নিকেশও করা হয়। তারই বদলা নিতে উত্তর পশ্চিম নাইজেরিয়ার জামফারা প্রদেশের একের পর এক গ্রামে হানা দেয় দস্যুদল। একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার বাইকে চেপে প্রায় ৩০০ জন জামফারা প্রদেশের পর পর ৮টি গ্রামে হানা দেয়।নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। নৃশংস হত্যালীলা থেকে পার পায়নি কেউই। যুবক-যুবতী থেকে শিশু-বৃদ্ধ, সকলকে হত্যা করে তারা। অন্য আরেকটি ঘটনায় আনকা প্রদেশে ৩০ জনকে খুন করেছে দস্যুরা।
যদিও ২০০ জনের মৃত্যুর কথা মানতে নারাজ সে দেশের সরকার। তাদের দাবি, প্রত্যাঘাতে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও স্থানীয়দের দাবি, সংখ্যা এর অন্তত ৪ গুণ। এদিকে শনিবার ওই গ্রামগুলির দখল নিয়েছে সেনা। জানা গিয়েছে, গণকবর তাদের সমাধিস্থ করা হয়। এদিকে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, দমন অভিযান চলছে। সেনাবাহিনী দস্যুদের একাধিক হাতিয়ার, সম্পত্তি দখল করেছে। আমজনতাকে রক্ষা করতে সেনা ভবিষ্যতেও অভিযান চালাবে।
আরও পড়ুন: লাদাখের প্যাংগং লেকে সেতু বানিয়েছে চীন, স্বীকার করল মোদী সরকার