কেফিয়াহ, একধরনের সাদা-কালো সুতির কাপড়। মূলত আরব দুনিয়ার দেশগুলোতে নারী-পুরুষ উভয়েই ব্যবহার করে এই স্কার্ফ। যা আবার ফিলিস্তিনিদের কাছে প্রতিবাদ, সংগ্রাম ও প্রতিরোধের প্রতীক। ড্রেস কোডের দোহাই দিয়ে সেই পোশাক নিষিদ্ধ করেছিল নিউইয়র্কের নোগুচি মৌজিয়াম।
শুধু তাই নয়, কেফিয়াহ পরার অপরাধে তিন কর্মীকে কাজ থেকে বরখাস্ত করে ওই মিউজিয়াম। সেই প্রতিবাদেই এবার ওই মিউজিয়ামের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী লেখক ঝুম্পা লাহিড়ী।
গত মাসে শিল্পী ইসামু নোগুচির প্রতিষ্ঠিত এই সংগ্রহশালা কর্মীদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করে, কোনও রকম রাজনৈতিক বার্তা, স্লোগান অথবা প্রতীক বহনকারী পোশাক পরে কাজে আসা যাবে না। এই ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যে সাদা-কালো কেফিয়ে স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে মিউজিয়ামে আসেন তিন কর্মী।
ঝুম্পার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে মিউজিয়ামের বিবৃতি, ‘‘আমরা তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান করি। আমাদের পোশাকবিধি নীতি যে সকলের মতাদর্শের সঙ্গে মিলবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।’’ মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষ তাঁদের সিদ্ধান্তে অটল থেকে জানান, ‘‘আমরা আমাদের মূল্যবোধের পথ ধরেই ইসামু নোগুচির শিল্পকে বোঝার এবং বোঝানোর মূল লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।’’ তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে মিউজ়িয়ামের অন্দরেও।
গত এক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্টে ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত তিন ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁদের মধ্যে দু’জনের মাথায় ছিল কেফিয়াহ নামক ওই স্কার্ফ। চলতি বছরের মে মাসে নিউইয়র্ক সিটির একটি হাসপাতাল থেকেও এক ফিলিস্তিনি নার্সকে এই স্কার্ফ পরার কারণ দেখিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল এ বছর নোগুচি মিউজিয়াম পুরস্কারের জন্য ঝুম্পা লাহিড়ীকে মনোনীত করে। আগামী মাসেই পুরস্কার পাওয়ার কথা ছিল ঝুম্পার।
প্রসঙ্গত, ‘হোয়ার অ্যাবাউট আস’ উপন্যাসের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন ঝুম্পা লাহিড়ী।