এ বার ভারতকে ‘ব্যান্ডউইথ ট্রানজিট’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ‘ব্যান্ডউইথ ট্রানজিট’ সুবিধার জন্য আবেদন জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে ‘বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন’ (বিটিআরসি)।
কাকে বলে ব্যান্ডউইথ? প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ তথ্য পাঠানো হয় তাকেই ব্যান্ডউইথ বলে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সংঘাতের যে আবহ তৈরি হয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে এবার ঢাকার তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হল। যদিও পরিস্থিতি একেবারেই অন্য ছিল কয়েক মাস আগেও। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারত ও বাংলাদেশে যৌথভাবে ব্যান্ডউইথ পরিকাঠামো স্থাপনের পরিকল্পনা করে এদেশের টেলিকম সংস্থা ভারতী এয়ারটেল। সেইমতো সব প্রস্তুতিও সাড়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার আচমকাই সেই প্রস্তাবকে নাকচ করে দিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের জমানায় বাংলাদেশের ‘সামিট কমিউনিকেশনস’ এবং ‘ফাইবার অ্যাট হোম’, ভারতীয় কোম্পানি ‘ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড’-এর সঙ্গে আখাউড়া থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ট্রানজিট সংযোগ স্থাপনের অনুমতি চেয়ে বিটিআরসিতে আবেদন করেছিল। তাতে প্রাথমিক সম্মতিও মিলেছিল। আখাউড়া সীমান্তে একটি ইন্টারনেট সার্কিট স্থাপনের মাধ্যমে এই ট্রানজিট সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাব ছিল ওই আবেদনে। কিন্তু স্থলপথে কেব্ল যোগাযোগ (টেরেস্ট্রিয়াল কেব্ল) স্থাপনের জন্য ওই ট্রানজিট সংযোগে বাংলাদেশের তেমন কোনও লাভ হত না বলে বিটিআরসির একটি সূত্র জানাচ্ছে। তাদের দাবি, ব্যান্ডইউথের সুযোগ পেয়ে লাভবান হত ভারত।
বিটিআরসির এক আধিকারিক সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় দাবি করেছেন, এই ব্যান্ডউইথ ট্রানজিটে ভারত লাভবান হবে। কিন্তু বাংলাদেশের তেমন কোনও লাভ হবে না। যেটুকু লাভ তা কেবল হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী বাংলাদেশের সামিট এবং ফাইবার অ্যাট হোমের হত। আর তাই সবদিক বিবেচনা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বাংলাদেশ। ‘সামিট কমিউনিকেশনস’-এর চেয়ারম্যান মহম্মদ ফরিদ খান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তথা গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে পাঁচ বার জাতীয় সংসদে নির্বাচিত ফারুক খানের ছোট ভাই।