Bangladesh: General Waker-uz-Zaman: Will he be the architect of stability in Bangladesh's political turmoil?

Bangladesh: বাংলাদেশে আবারও ক্ষমতার অলিন্দে সেনা! জেনারেল জামানের ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিয়ে জল্পনা

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গড়ছে সেনা। সোমবার দুপুরে ঘোষণা করলেন সে দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরই পড়শি দেশে কার্যত সেনাশাসন ফিরল।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি অশান্ত পরিস্থিতিতে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদের প্রত্যক্ষ তৎপরতার গঠিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নেতৃত্বে ছিলেন, অর্থনীতিবিদ তথা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ফখরুদ্দিন আহমেদ। এ বার জনরোষের জেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফা এবং দেশত্যাগের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামানের ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা।

জেনারেল জামান সোমবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে হাসিনার ইস্তফার কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করব। রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে। একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করা হবে। সব হত্যার বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখুন। আমরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’’ তবে এই সরকারে আওয়ামি লিগের সদস্যরা থাকবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ, দেশজুড়ে হাসিনা ও তার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরমে উঠেছে। তাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হচ্ছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারে তাদের দলের সদস্যদের রাখা হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধছে।

হাসিনার ইস্তফার দাবিতে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ এবং হিংসার মধ্যেই রবিবার গভীর রাতে জেনারেল জানান সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে ঢাকায় তাঁর বাসভবনে বৈঠক করেছিলেন। তার পরেই জল্পনা তৈরি হয়, এ বার সরাসরি পরিস্থিতির উপর হস্তক্ষেপ করতে চলেছে সেনা। সূত্রের খবর, হাসিনা ইস্তফা দিয়ে তদারকি সরকারের ভার দিয়েছেন জাতীয় সংসদের (পার্লামেন্ট) স্পিকার শিরিন সারমিন চৌধুরির হাতে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেত্রী শিরিনকে সেনা মানবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ঘটনাচক্রে, রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিনও আওয়ামী লীগের প্রাক্তন নেতা এবং ‘হাসিনা ঘনিষ্ঠ’ হিসাবেই পরিচিত।

১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনটি বড় মাপের সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছে ভারতের পূর্বপ্রান্তের প্রতিবেশী দেশ। সেনার হাতে নিহত হতে দেখেছে দুই প্রেসিডেন্ট— শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমানকে।  শেষ বার ২০০৭ সালে সরকার গঠনে হস্তক্ষেপ করেছিল বাংলাদেশ সেনা। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধিনিষেধের কারণে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন সরসরি ক্ষমতার চাবিকাঠি হাতে নেননি।

সে সময় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রধামন্ত্রিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়েছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ-সহ বিরোধীরা সেই সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগে আন্দোলনে নামায় সক্রিয় হয় সেনা। প্রাথমিক ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসকে। কিন্তু তিনি অস্বীকৃত হওয়ায় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদের সক্রিয়তার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফখরুদ্দিন।