কারাগারেই থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে চট্টগ্রামের আদালত।
চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণকে গত ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করেছিল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ।এই সাধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের লালদিঘির ময়দানে হওয়া হিন্দু মহাজোটের সভায় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। সেখানে ইসকনের পতাকা জাতীয় পতাকার উপরে টাঙানো হয়েছিল।
২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আদালত চত্বর। সেখানে আইনজীবী আলিফকে হত্যার অভিযোগ হিন্দু বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। ১১ জন হিন্দু বিক্ষোভকারীকে সরাসরি খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম পুলিশ। আদালতে ভাঙচুর, অশান্তির মামলায় গ্রেফতার করা হয় আরও ৪০ জনকে।
এর আগে একাধিকবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের হিন্দু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণর জামিনের শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ১১জন আইনজীবীর এ দিন চট্টগ্রাম আদালতে আসে। তাঁরা চিন্ময়কৃষ্ণর হয়ে আদালতে জামিনের আর্জি জানান।
তাঁরা বলেন, চিন্ময়কৃষ্ণ একজন সাধু। তিনি দাগি আসামি নন। তাছাড়া কারাগারে তিনি একাধিকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর চিকিৎসা দরকার। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা পাল্টা বলেন, চিন্ময়কৃষ্ণের নাম দেশদ্রোহিতা ছাড়াও আরও কয়েকটি মামলায় রয়েছে। পুলিশের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এই অবস্থায় তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তদন্ত বিঘ্নিত হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের দায়রা বিচারক মহম্মদ সফিকুল ইসলাম চিন্ময়কৃষ্ণর জামিনের আবেদন খারিজ করেন। বিচারক জানান, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ধৃত চিন্ময়কৃষ্ণর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাবাস হতে পারে। তাই জামিন দেওয়া সম্ভব নয়। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে যাবেন বলে জানিয়েছেন চিন্ময়কৃষ্ণর আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার চিন্ময়ের জামিন মামলার শুনানির কারণে চট্টগ্রাম আদালতে ছিল নজিরবিহীন নিরাপত্তা। পুলিশ ছাড়াও মোতায়েন করা হয় সেনা এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির জওয়ানদের। আদালতে প্রবেশের সময় প্রত্যেকের পরিচয়পত্র যাচাই করা হয়। চিন্ময় অনুগামীদের আদালত এলাকায় ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।