ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।Belgium wants sanctions against Israel for Gaza bombings
এই পরিস্থিতিতে গাজায় আগ্রাসন চালানোর কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন বেলজিয়ামের উপ-প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে গাজার হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবিরগুলোতে বোমাবর্ষণের ঘটনার তদন্ত করারও দাবি করেছেন তিনি।
বুধবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় আগ্রাসনের দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে এবং গাজায় হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলার তদন্ত করতে বুধবার বেলজিয়াম সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী পেট্রা ডি সাটার।
নিউজব্লাড সংবাদপত্রকে বেলজিয়ামের এই উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সময় এসেছে। নির্বিচারে বোমা হামলা চালানো অমানবিক। এটা স্পষ্ট, গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক যে দাবি রয়েছে সেটির প্রতি কোনও গুরুত্ব দেয় না ইসরায়েল।’
প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
হামাসের এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে দেড় হাজার ইসরায়েলি। নিহতদের মধ্যে তিন শতাধিক সেনাসদস্য রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও সাড়ে ৪ হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকসহ কমপক্ষে আরও ২৪২ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
এরপর গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১০ হাজারে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শিশু এবং প্রায় ৩ হাজার নারী রয়েছেন।
ডি সাটার বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত অবিলম্বে ইসরায়েলের সঙ্গে তার সকল সহায়তা চুক্তি ও কার্যক্রম স্থগিত করা।
তিনি আরও বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে পণ্যের আমদানিতেও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা উচিত এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী সহিংস বসতি স্থাপনকারী, রাজনীতিবিদ, সৈন্যদের ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) প্রবেশ নিষিদ্ধ করা উচিত।
একই সময়ে তিনি বলেন, বেলজিয়ামের উচিত হামাসকে অর্থের প্রবাহ কমানোর পাশাপাশি বোমা হামলার তদন্তের জন্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের জন্য তহবিল বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
ডি সাটার বলেন, এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সন্ত্রাসের জন্য অর্থ ব্যয় হয় এবং হামাসকে অর্থ সরবরাহকারী সংস্থা ও লোকেদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত।
রয়টার্স বলছে, অক্টোবরের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধ এখন দ্বিতীয় মাসে প্রবেশ করেছে। জাতিসংঘ এবং জি-৭ দেশগুলো বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করার জন্য চলমান সংঘাতে মানবিক বিরতির আবেদন আরও জোরালো করেছে।
এছাড়া দীর্ঘ এক মাস ধরে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল। এতে করে ফিলিস্তিনি নাগরিকরা খাদ্য, জ্বালানি, খাবার জল ও ওষুধের সংকটে পড়েছেন।
https://www.thenewsnest.com/world-belgium-wants-sanctions-against-israel-for-gaza-bombings/