আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। হাওয়াই, মিসৌরি, ইউটাহ এবং উইসকনসিনের ভোটাররা ইতিমধ্যেই তাদের ভোট দেওয়া শুরু করেছেন। সমীক্ষাগুলোতে দেখা যাচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প গোটা দেশে বিশেষ করে ব্যাটেলগ্রাউন্ডে নেক টু নেক ফাইট করছে। ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ হল সেইসব রাজ্য যেখানে দুই দলের (ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান) সমর্থনের মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। এই রাজ্যগুলো নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । শেষ মুহুর্তে এরাই বদলে দিতে পারে জয় পরাজয়ের সমীকরণ। উদাহরণস্বরূপ, ফ্লোরিডা, পেনসিলভেনিয়া, ও উইসকনসিন ইত্যাদি।
সর্বশেষ আপডেটে দেখা যাচ্ছে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। মঙ্গলবার রয়টার্স/ইপসোস-এর এক সমীক্ষাতে দেখা গেছে সামান্য হলেও এগোচ্ছেন হ্যারিস। এই সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে ট্রাম্পের থেকে অন্তত তিন শতাংশ এগিয়ে রয়েছেন হ্যারিস। শতাংশের বিচারে ট্রাম্পকে রয়টার্স দিচ্ছে ৪৩ শতাংশ, হ্যারিসকে তারা দিচ্ছে ৪৬ শতাংশ। গতমার্চে রয়টার্সের একটি সমীক্ষা অবশ্য জানিয়েছিল হ্যারিস পেতে পারেন ৪২ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোট।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ইমারসন কলেজ এবং এবিসি নিউজ, সিবিস নিউজ প্রকাশিত রিপোর্টেও এগিয়ে ছিলেন কমলা। কিন্তু শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিটের সমীক্ষা এগিয়ে রাখছে ট্রাম্পকে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান গত ১০ দিনের বিভিন্ন জনমত সমীক্ষার গড় করে বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে এখনও এগিয়ে রয়েছে কমলা হ্যারিস। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনের দোরগোড়ায় এসেও দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা চলছে। বিভিন্ন জরিপে কমলা হ্যারিস এখনো ট্রাম্পের চেয়ে ১ পয়েন্টে এগিয়ে। কমলার সমর্থন যেখানে ৪৭ শতাংশ, সেখানে ট্রাম্পের সমর্থন ৪৬ শতাংশ। তবে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট জিতে কে হোয়াইট হাউসে যাবেন, এই জরিপ থেকে নির্ধারণ করা দুষ্কর। জনমত জরিপের গড় ধরলে দেখা যায়, আগাম ভোটের অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে মিশিগানে ১ পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। এ ছাড়া ১ পয়েন্টেরও কম ব্যবধানে এগিয়ে পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, উইসকনসিন ও নেভাদায়। অন্যদিকে ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলাইনায় ২ পয়েন্ট ও অ্যারিজোনায় ১ পয়েন্টে এগিয়ে।
কমলা হ্যারিসের পাশে দাঁড়িয়ে প্রচার করেন জনপ্রিয় পপ তারকা বিয়ন্সে।টেক্সাস বরাবরই রিপাবলিকানদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেই টেক্সাসেরই হিউস্টন শহরের অডিটোরিয়ামে যে জনসভায় কমলা কাল বক্তৃতা দিলেন, সেখানে এত বিপুল ভিড় আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলেই জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি। তবে ডেমোক্র্যাট নেতা-নেত্রীরা নিজেরাও স্বীকার করে নিচ্ছেন, এত ভিড়ের পরেও টেক্সাসের রায় সম্ভবত রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের দিকেই যাবে।
ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় ফিরলে শুধু বাছা বাছা প্রদেশ নয়, এর পর গোটা দেশেই গর্ভপাত-বিরোধী কঠিন আইন চালু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করছেন ডেমোক্র্যাটরা। কমলাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘অন্য প্রদেশে বসে যাঁরা এই সভা দেখছেন, মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, নেভাডা, নিউ ইয়র্ক হোক বা ক্যালিফোর্নিয়া। আপনারা কেউ সুরক্ষিত নন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে একা সব প্রদেশ থেকে মহিলাদের এই অধিকার কেড়ে নেবেন। আমি শুধু বলতে চাই, একটা নির্বাচনই ফারাক এনে দিতে পারে।’’ বিয়ন্সে বলেছেন, ‘‘আমি এক জন মা হিসেবে এখানে এসেছি। এক জন মা যিনি নিজের এবং অন্য আরও অনেক অনেক কন্যাসন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে
ভীষণ উদ্বিগ্ন।’