প্রজনন হার বাড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে জাপান সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও জাপানের স্থানীয় জনসংখ্যা প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০০ জন করে কমছে। জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য দেশটির সরকার নাগরিকদের বিয়ে ও স্মার্ট পরিবার গঠনের জন্য উৎসাহিত করছে। এবার জনসংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে একটি ডেটিং অ্যাপ চালু করছে সরকার।
ঠিক কীরকম এই অ্যাপটি? এই অ্যাপ ব্যবহার করতে গেলে ইউজারদের একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করতে হবে। যে চিঠিতে বলা রয়েছে, যে তিনি বিয়ে করতে ইচ্ছুক আর সেই কারণে অ্যাপটি ব্যবহার করতে চান। এই অ্যাপের রেজিস্ট্রেশনের সময় শুধু ফোটো আইডি-ই নয়, তার সঙ্গে আয়ের সনদ এবং নিজের সম্পর্কের অবস্থা (রিলেশনশিপ স্টেটাস) নিশ্চিত করে একটি প্রয়োজনীয় নথিও জমা দিতে হবে ব্যবহারকারীকে। অ্যাপে ব্যবহারকারীর উচ্চতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা-সহ ১৫ বিভাগে ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। এই সব তথ্যই যোগ্য পাত্র/পাত্রী দেখতে পাবেন। টোকিয়োর এক সরকারি আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের করা সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বিয়ে করতে ইচ্ছুক পাত্রপাত্রীদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপে সঙ্গীর খোঁজ করেন। সরকারি ভাবে আমরা তাঁদের সাহায্য করছি মাত্র।’’
১৯৭৩ সাল থেকে গত পাঁচ দশকে এই হার ২.১-এর উপরে উঠতে পারেনি। ২০২৩ সালে জাপানে জন্মহার সর্বকালীন নিম্নমানে পৌঁছেছে। এর পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। আর তাই টোকিওর স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এই এআই-নির্ভর ডেটিং অ্যাপ লঞ্চ করা হয়েছে। অ্যাপটির নাম ‘টোকিও ফুটারি স্টোরি’।
জাপানের স্বাস্থ্য ও শ্রম বিভাগের পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ১২ কোটি ৩৯ লক্ষ জনসংখ্যার দেশটিতে মাত্র ৭ লক্ষ ২৭ হাজার ২৭৭ জন শিশুর জন্ম হয়েছে যা তার আগের বছরের চেয়ে কম। জাপানের জনসংখ্যা কমে যাওয়ার সমস্যাটি সাম্প্রতিক সময়ে আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে। কারণ, প্রতি বছরই দেশটিতে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সংখ্যা শিশু জন্মের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে দেশটির জনসংখ্যা দ্রুত কমতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়েছে দেশটির শ্রমশক্তি, অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে। ২০২৩ সালে জাপানে ১৫ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ, গত বছর দেশটিতে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সংখ্যা জন্ম নেওয়া শিশুদের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি ছিল।