বাংলাদেশের বহু চর্চিত গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামিকে নির্দোষ ঘোষণা করল ঢাকার আদালত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার ওই মামলায় নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত বিএনপি জমানার দুই মন্ত্রীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল। এছাড়া বিএনপির কার্যকরী চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সহ ১৯জনকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দিয়েছিল।নিম্ন আদালত। রবিবার হাই কোর্ট ওই মামলায় সব আসামিকেই নির্দোষ ঘোষণা করে।
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লিগের অফিসের বাইরে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। তিনি দলীয় দফতরের বাইরে একটি লরির উপর দাড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন। হামলার মুখে লরির নিচে আশ্রয় নিয়ে সে যাত্রায় প্রাণ রক্ষা হয় তাঁর। নিহত হন ৩০ জন। শেখ হাসিনা সহ আহত হন প্রায় তিনশো কর্মী। আওয়ামী লিগ পরের বছর থেকে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস পালন করে আসছে। হামলার ঘটনার সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি অবশ্য হাসিনার দিকেই ঘটনার দায় চাপিয়ে ছিলেন। খালেদার অভিযোগ ছিল, হাসিনা ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন।
ওই ঘটনায় ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা মামলায় ঢাকার নিম্ন আদালত ২০১৮ সালে বিএনপি জমানার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এলে মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম যুক্ত করা হয় ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে। তারেক সহ ১১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত।
শেখ হাসিনার সভায় গ্রেনেড হামলার অভিযোগে বেকসুর খালাস হলেন তারেক রহমান। নিম্ন আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার পুত্র। কিন্তু রবিবার নিম্ন আদালতের সেই রায় খারিজ করে দিল ঢাকার হাই কোর্ট। খালেদাপুত্র-সহ সকল দোষীকেই বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে উচ্চ আদালত। ২০০৪ সালে হাসিনার সভায় গ্রেনেড হামলার অভিযোগে যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের সকলকেই বেকসুর খালাস করেছে হাই কোর্ট।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক আপাতত লন্ডনে রয়েছেন। সূত্রের খবর, তাঁকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই লন্ডনে পৌঁছে গিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অসুস্থ খালেদার পরে তাঁর ছেলে দেশে ফিরে বিএনপির দায়িত্ব নেবেন, এমন জল্পনাই চলছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে।