আগামী জানুয়ারিতে তাঁর শপথগ্রহণ। কিন্তু এখন থেকেই শুরু হয়েছে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পালা। শনিবার বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন ডলার ব্যবহার না করলেই ১০০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হবে ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির উপরে। প্রসঙ্গত, ৯ সদস্যের ব্রিকসে রয়েছে ভারতও।
২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক মঞ্চ হিসাবে আত্মপ্রকাশ হয় ব্রিকসের। এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মঞ্চ যেখানে নেই আমেরিকা। ভারত, চিন, রাশিয়া, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা এই গ্রুপের সদস্য। পরবর্তীকালে ইরান, মিশর, ইথিওপিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এতে যোগ দিয়েছে। ২০২৩ সালে আয়োজিত ব্রিকস সম্মেলনে বিকল্প মুদ্রার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য মার্কিন ডলার ব্যবহার করা হয়। এরই বিকল্প তৈরির প্রস্তাব উঠে আসে সেই মঞ্চে। ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা প্রথম সেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। চিন, রাশিয়া তা সমর্থনও করে। নন-ডলার লেনদেন কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলেছিল। এর পর ডলার নির্ভরতা কমানোর কথা একাধিকবার কথা শোনা গিয়েছে বেজিং ও মস্কোর মুখে।
বৈঠক শেষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হল বেলজিয়ামের ‘সুইফট ফিনানশিয়াল মেসেজিং সিস্টেম’। সেই সময় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারতের অবস্থান বোঝাতে জানিয়েছিলেন, ডলারের প্রতিপক্ষ গড়ে তোলার কোনও ‘অসৎ বাসনা’ নেই ভারতের। যদিও ভারতের কিছু বাণিজ্যসঙ্গীর কাছে পর্যাপ্ত ডলার না থাকায় লেনদেনে সমস্যা তৈরি হয়। সেই ক্ষেত্রেই ভারত বিকল্পের খোঁজ চালাচ্ছে। অর্থৎ ভারত যে ডি-ডলারাইজেশনের পক্ষে নয়, সে বার্তাও কৌশলে দিয়েছে।
এই বিষয় নিয়েই এ দিন তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ব্রিকসের দেশগুলি ডলার থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে চাইছে। এই দেশগুলিকে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে আমেরিকান ডলারকে রিপ্লেস করার জন্য নতুন ব্রিকস কারেন্সি আনবে না বা অন্য কোনও মুদ্রাকে সমর্থন করবে না। যদি তারা করে, তাহলে ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে।’ ব্রিকসভুক্ত দেশগুলি নতুন মুদ্রা আনলেও তা মার্কিন ডলারের আধিপত্য খর্ব করতে পারবে না বলে মনে করেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মার্কিন ডলারকে প্রতিস্থাপিত করতে পারবে না ব্রিকস। কোনও দেশ যদি সেই চেষ্টা করে, তা হলে তাকে ‘বিদায়’ জানাবে আমেরিকা। আমেরিকার সঙ্গে লেনদেন করতে পারবে না ওই দেশ।