কাফ সিরাপকাণ্ডের (Cough Syrup) পর এবার নিশানায় আরও এক ভারতীয় সংস্থা। দেশীয় এক ড্রাগ সংস্থার তৈরি চোখের ওষুধ (Eye Drops Death) ব্যবহারে মৃত্যু হল এক মার্কিন নাগরিকের। দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন আরও পাঁচ। খবর প্রকাশ্যে আসতেই মার্কিন বাজার থেকে সেই আই ড্রপ (Eye Drop) তুলে দিল ভারতীয় সংস্থা গ্লোবাল ফার্মা ফ্রাইভেট লিমিটেড।
জানা গিয়েছে, এই কোম্পানির তৈরি চোখের ড্রপ ব্যবহার করার পরই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন আমেরিকার বাসিন্দারা। একাধিক বাসিন্দার চোখে এই ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) গুরুতর ক্ষতি করেছে। এক নাগরিকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে এই ওষুধ ব্যবহারের পর। ফলে কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে এই চোখের ড্রপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ড্রাগ সংস্থাটি। তবে ভারতীয় কোম্পানি ওষুধ বাজার থেকে তুলে নিলেও লাভ হয়নি। কারণ ইতিমধ্যেই এই ওষুধটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (Artificial Tears Centers for Disease Control and Prevention)।
আরও পড়ুন: Rishi Sunak: শিশুদের পর্ন দেখা নিয়ে আইন আনতে নারাজ ঋষি সুনক? বাড়ছে বিতর্ক
মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ( Food and Drug Administration) এই ওষুধটির উপাদানগুলো যাচাই করে দেখছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আই ড্রপ থেকে চোখে সিউডোমোনাস অ্যারুগিনোসা (Pseudomonas Aeruginosa) নামে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হচ্ছে। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ফুসফুস, রক্তে সংক্রমণ ছড়ায়। তবে ওই ওষুধটি থেকে চোখেও এই প্রকার ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হচ্ছে বলে খবর। শুধু তাই নয়, ব্যাকটেরিয়াটি ক্রমেই অ্য়ান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী (Antibiotic Resistant) হয়ে উঠছে। মানে হল, অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েও এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সারানো সম্ভব নয়।
খবর প্রকাশ্যে আসতেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে ভারতীয় সংস্থা। সংস্থার তরফে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘অসুস্থ মানুষদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আর্টিফিসিয়াল টিয়ার্স আই ড্রপটি বাজার থেকে তুলে নিচ্ছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আমাদের সংস্থা যথেষ্ট পরিমাণে সহযোগিতা করছে। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করছি।’
ভারতের তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে উজবেকিস্তান ও আফ্রিকার গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যুর ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। নয়ডার দুটি ওষুধ কোম্পানি ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে সেই ফার্মা কোম্পানির মালিকদের। এবার ভারতের তৈরি চোখের ওষুধ নিয়ে অভিযোগ উঠল। যা দেশের ভাবমূর্তি যে নষ্ট করল, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।