খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক বুধবার একটি উপদেশ জারি করেছে এবং কানাডায় ভারতীয় নাগরিক এবং ছাত্রদের ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার’ জন্য উপদেশ দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রকের (Ministry of External Affairs ) বুধবারের জারি করা এই পরামর্শে চিন্তায় পড়েছেন সে দেশে পড়তে যাওয়া আড়াই লাখ ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী এবং প্রায় সাড়ে সাত লাখ অনাবাসী ভারতীয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রক বলেছে, কানাডায় ভারতীয় দূতাবাস, দূতাবাস কর্মী এবং খলিস্তান বিরোধীদের উপর হামলার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। সে দেশে থাকা ভারতীয়দের হামলার ঘটনা হয়েছে এমন কিছু জায়গার নামও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা যেন দূতাবাস এবং কনস্যুলেট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন।
আরও পড়ুন: Luna-25 Crashed: ভেঙে পড়ল রাশিয়ার চন্দ্রযান লুনা, ব্যর্থ ভারতকে টপকে যাওয়ার স্বপ্ন
Advisory for Indian Nationals and Indian Students in Canada:https://t.co/zboZDH83iw pic.twitter.com/7YjzKbZBIK
— Arindam Bagchi (@MEAIndia) September 20, 2023
এদিকে, কানাডার সঙ্গে সম্পর্কের দ্রুত অবনতি এবং আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। কানাডার সঙ্গে বিবাদকে অন্য দেশগুলির সামনে কী ভাবে তুলে ধরা হবে, ভারতের অবস্থানের পক্ষে প্রভাবশালী দেশগুলিকে সামিল করার কৌশল ইত্যাদি নিয়ে দু’জনের কথা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। এই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রক নাগরিকদের সাবধান করে বার্তা জারি করে। এর আগে মঙ্গলবার, কানাডিয়ান সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে। সেখানে, ‘সারা দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলার হুমকির’ কারণে ভারতে ভ্রমণ করার সময় তার নাগরিকদের ‘উচ্চ মাত্রায় সতর্কতা অবলম্বন করতে’ বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে কানাডার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে সোমবার দাবি করেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ট্রু়ডো। কানাডার তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দাবি, বিষয়টি নিয়ে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও কথা হয়েছে। খুন হওয়া খলিস্তানি নেতা কানাডার নাগরিক। ট্রুডো বলেছেন, তাঁর দেশে তাঁরই নাগরিককে খুন সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ।
ট্রুডোর ওই বিবৃতির পরে কানাডার এক ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি ‘র’-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। যদিও তাঁর নাম জানাননি মেলানি। ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার মোদী সরকার কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, নিজ্জর খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করে ভারত। ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংহতির বিরোধী শক্তিকে কানাডা মদত দিচ্ছে বলে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে অভিযোগ তোলা হয়।
আরও পড়ুন: India-Canada: খলিস্তানি নেতা হত্যা মামলায় বহিষ্কৃত ভারতীয় কূটনীতিক, পাল্টা চাপ ভারতের