ইউক্রেনের (Ukraine) রাজধানী কিয়েভে ঢুকে পড়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। দুর্দমনীয় রুশ ফৌজের সঙ্গে একাই লড়াই চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনা। এহেন পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে পেশ করে আমেরিকা। সেই প্রস্তাবে ভোট না দিয়ে কার্যত রাশিয়ার পাশেই দাঁড়াল ভারত।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ভারতের মদত চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল ইউক্রেন। সেদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে দৌত্যের আরজি জানিয়েছিলেন। ফলে সকলের চোখ ছিল নয়াদিল্লির উপর। প্রশ্ন ওঠে, এবার কি মার্কিন চাপে ঐতিহাসিক বন্ধু রাশিয়ার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে ভারত? কিন্তু রাষ্ট্রসংঘে মোদি সরকার স্পষ্ট করে দিল যে কিছুতেই মস্কোর হাত ছাড়বে না তারা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আমেরিকার নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে চিনও। এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় পোল্যান্ড, জার্মানি ও ইটালি-সহ এগারোটি দেশ। এদিকে, এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে স্বাভাবিকভাবেই ভেটো দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া।
নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের ভোটদান থেকে বিরত থাকার পক্ষে যুক্তি পেশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি।তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে বৈরিতা এবং হিংসা বন্ধের আবেদন জানাচ্ছি আমরা।’’ একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেন সঙ্কট সমাধানের পথ মিলতে পারে বলেও জানান তিনি। নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ভারতের তরফে আগেই ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে ‘ভারসাম্যের কূটনীতির’ পথে হাঁটার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। শনিবার গুরুমূর্তির বক্তব্যেও তার প্রমাণ মিলেছে। আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলির আনা প্রস্তাবে, ‘ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের জন্য রাশিয়ার কড়া নিন্দা’ করা হয়েছিল। নয়াদিল্লি পশ্চিমী দুনিয়ার সেই মস্কো বিরোধিতার উদ্যোগে শামিল হয়নি।
সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে ভাতে মারার কৌশল নিয়েছিল আমেরিকা (USA)। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বাড়তি আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। আমেরিকায় থাকা রাশিয়ার (Russia) চারটি ব্যাংকের সম্পত্তি ফ্রিজ করে বাইডেন প্রশাসন। এবার আরও কঠোর পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছে আমেরিকা।