গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল আগেই। এ বার বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করার জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে অনুরোধ জানাল সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (আইসিটি)।
মঙ্গলবার দুপুরে এ কথা জানান ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটর মহম্মদ তাজুল ইসলাম। রবিবারই এই অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।তাজুল বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা যে হেতু মানবতা-বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলে আছে। কিন্তু বাংলাদেশের জুরিসডিকশনের বাইরে তিনি চলে গিয়েছেন। সে কারণে আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা হিসাবে ইন্টারপোল যাতে তাঁকে গ্রেফতার করার ব্যবস্থা নেয় এবং অন্তত রেড অ্যালার্ট জারি করে, সেই বিষয়ে আমরা অনুরোধ পাঠিয়েছি।’’
ইন্টারপোল হল পুলিশের একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। ১৯৬টি দেশ নিয়ে অবস্থিত এই সংস্থার সদস্য। এক দেশের পলাতক অপরাধীকে আর এক দেশ থেকে গ্রেফতার করে তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর কাজ করে এই সংস্থা।
হাসিনার ক্ষেত্রে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মানবতা বিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ নিয়ে একাধিক মামলা হয়। একটি মামলায় বিচারক হাসিনা-সহ ৪৫জনকে আগামী ১৮ নভেম্বর আদালতে পেশ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।
নিয়ম হল, পুলিশের কাছ থেকে আদালতের নির্দেশের কপি বিদেশ মন্ত্রকের কাছে গেলে তারা ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে। রবিবার পর্যন্ত ঢাকার তরফে এমন কোনও আর্জি নয়াদিল্লির কাছে পেশ করা হয়নি। তাছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস বলেই রেখেছেন, হাসিনার বিচার শেষ হওয়ার পর সরকার তাঁকে ফেরত চাইতে পারে। হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাঁর বিচার হতে পারে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন পর্বে ‘গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি মামলার প্রেক্ষিতে গত ১৭ অক্টোবর হাসিনা, তাঁর দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের-সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আইটিসি। দু’টি মামলার মধ্যে একটি কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ছাত্র মহম্মদ মেহেদীর বাবা মহম্মদ সানাউল্লাহ দায়ের করেছিলেন। অপরটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত নেতা আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মহম্মদ বুলবুল কবির। শুধু হাসিনা নন, তাঁর সরকারের মন্ত্রী, দল আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন শাখা সংগঠন এবং কয়েক জন সরকারি আধিকারিকের নামেও অভিযোগ করা হয়েছিল।