হিজাব বিতর্কে অগ্নিগর্ভ ইরান। পথে নেমে নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে ২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির হত্যার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুসলিম দেশটির মহিলারা। এহেন পরিস্থিতে বিতর্ক আরও উসকে দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। হিজাব পরতে অস্বীকার করায় কথা দিয়েও সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিলেন না তিনি।
অসন্তোষের আগুনে জ্বলছে ইরান। মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে পথে নেমে পুলিশের গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫০। বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীরও। এমনটাই দাবি করা হয়েছে অসলোর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ইরান হিউম্যান রাইটস্’-এর পক্ষ থেকে। ইরান সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত সরকার বিরোধী বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সরকারের দেওয়া তথ্য ভুয়ো বলেই দাবি করেছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরানের জ্বলন্ত ছবি। সন্ধ্যা নামার পরই তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের ভিড়। সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি কুশপুতুল এবং হিজাব পুড়িয়েও প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের।
এই অবস্থায় আন্দোলন থামাতে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চলেছে ইব্রাহিম রাইসির সরকার। আন্দোলনের নেতৃত্ব যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে ‘ফেসিয়াল রেকগনিশন’ প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরানের পুলিশ। ইরান প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতিদিনই আইন-শৃঙ্খলা ভাঙার অভিযোগে শয়ে শয়ে মহিলাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু তার পরও আন্দোলন থামছে না। তার কারণ হিজাব নিয়ে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। সেটা বন্ধ করতেই আন্দোলনের মাথাদের গ্রেফতারের প্রয়োজন রয়েছে। আর তাই এবার প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে খবর সূত্রের।
সম্প্রতি হিজাব না পরে রাস্তায় বের হয়েছিলেন মাশাহ আমিনি। তাঁকে প্রকাশ্যে হেনস্থা করেন কয়েকজন। পরে ওই তরুণীকে আটক করে ইরানের পুলিশ। মাসার পরিবারের অভিযোগ, হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর উপর অত্যাচার চালানো হয়। ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেই অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে ওই তরুণী কোমায় চলে যান। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।