জেরুজালেমে অবস্থিত, ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ, আল আকসা। ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, এই জায়গা থেকেই শেষ নবী হজরত মহম্মদ সপ্তম আসমানের সফরে গিয়েছিলেন এবং সেখানে আল্লাহর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। এবার সেই আল আকসা মসজিদ থেকেই আর মাইকে শোনা যাবে না আজানের সুমধুর শব্দ। শুধু আল আকসা মসজিদ থেকেই নয়, ইজরায়েলের সমস্ত মসজিদেই লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আজান সম্প্রচার নিষিদ্ধ করল তেল আবিব। সোমবার (২ ডিসেম্বর), এই নির্দেশ বাস্তবায়িত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন সেই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী, ইতামার বেন গাভির।
এক্স-এর একটি পোস্টে কট্টর মুসলিম বিরোধী এই মন্ত্রী বলেছেন, তিনি এই নীতিটি চালু করতে পেরে ‘গর্বিত’। তিনি লেখেন, ‘মসজিদ থেকে অযৌক্তিক শব্দের অবসান ঘটবে, এই শব্দ ইসরায়েলের বাসিন্দাদের জন্য একটি বিপদ হয়ে উঠেছে।’ তবে ইসরায়েলের বিরোধী নেতারা ইতামার বেন গিভিরের এই নির্দেশের নিন্দা জানিয়েছেন। লেবার পার্টির গিলাদ কারিভ এক্সে লিখেছেন, ‘বেন গিভির ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছেন। অশান্তি সৃষ্টি না করা পর্যন্ত বেন গিভির থামবেন না। একটি ম্যাচের কাঠিই ব্যারেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।’
হাদেস-টা’আলের নেতা আহমেদ তিবিও এই নিষেধাজ্ঞার কঠোর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘বেন গিভির ঘৃণা ও আরবদের নিপীড়নের ওপর তার ঘাঁটি তৈরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাঙ্গাবাজ মন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী।’ ইজরাইলের আরবপন্থী দল, ইউনাইটেড আরব লিস্টের নেতারাও ইজ়রায়েল সরকারের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে। তারা বলেছে, জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে হিংসা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায়, বিভাজনে ইন্ধন দিচ্ছেন বেন গাভির এবং মসজিদগুলিকে নিশানা করছেন। ইহুদি-মুসলিমদের সহাবস্থান ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন তিনি।
ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মসজিদগুলিতে যে সকল লাউডস্পিকার সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো, সেগুলি বাজেয়াপ্ত করবে পুলিশ। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বেন গাভির। এরপরও যদি, কোনও মসজিদে লাউডস্পিকার ব্যবহার করে আজান সম্প্রচার করা হয়, তাহলে সেই মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করা হবে।