যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম তুলে দিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য হিলারি ক্লিনটন, জর্জ সরোস, ড্যানজেল ওয়াশিংটন, লিওনেল মেসিসহ ১৯ জন বিখ্যাত ব্যক্তিকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।অনুষ্ঠানে আরও পুরস্কৃত হন অভিনেতা-পরিচালক ডেনজেল ওয়াশিংটন। বিনোদন জগতে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসাধারণ দক্ষতা প্রমাণ করেছেন তিনি। এছাড়া, আইরিশ ব্যান্ড ইউটু’র প্রধান গায়ক বোনোও এই পুরস্কারে ভূষিত হন।
বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার রালফ লরেনকেও এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এই প্রথম কোনো ফ্যাশন ডিজাইনারকে এ মেডেল দেয়া হলো। (Lionel Messi, Hilary Clinton, Michael J Fox Awarded US’ Highest Civilian Honour)
ক্রীড়া জগত থেকে পুরস্কৃতদের তালিকায় নাম আসে ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির। যদিও তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। এই তালিকায় আরও স্থান পান বিজ্ঞান, মানবাধিকার এবং সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখা বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন তার মেডেল গ্রহণের সময় উপস্থিত সবাই তাকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান। হিলারির সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তার স্বামী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, মেয়ে চেলসি ক্লিনটন এবং নাতি-নাতনিরা। সমাপনী বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানান, এই সম্মাননা শুধু পুরস্কৃত ব্যক্তিদের জন্য নয়, বরং তাদের কাজের মাধ্যমে যে মূল্যবোধ সৃষ্টি হয়েছে, তা উদযাপনেরও একটি অংশ।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আর্জেন্টিনায় শিশুদের নিয়ে জনহিতকর কাজের জন্য এই সম্মান পেয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনীয় খেলোয়াড়ের সময়সূচি জটিলতার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। এছাড়া বিনিয়োগকারী ও দাতা জর্জ সোরোসও পুরস্কার পান, যা তার ছেলে অ্যালেক্স তার হয়ে গ্রহণ করেন। যারা পুরস্কার পেয়েছেন তারা নিজ নিজ কাজের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা, নিরাপত্তা জোরদার করা, উন্নয়ন ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তিগত, জাতীয় ও বেসরকারি পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।
রাজনীতি, মানবাধিকার, ক্রীড়াঙ্গন, বিজ্ঞান, বিনোদন ও এলবিজিটিকিউ-এর প্রসারে কাজ করা ব্যক্তিদের এই পুরস্কার দেয়া হয়। এবার ১৯ জন পেলেন রাষ্ট্রপতি পদক। পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে আরো রয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির বড় অনুদানদাতা বিলিওনিয়ার জর্জ সরোস। এর মধ্যে ক্রীড়া বিভাগে কাতার বিশ্বকাপ ও পরপর দুই কোপা আমেরিকা জয়ী মেসি পেলেন এই পুরস্কার।
মেসি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা বাস্কেটবলের ৬৫ বছর বয়সী সাবেক তারকা ‘ম্যাজিক জনসন’ এই পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ৫ বারের বাস্কেটবলের লিগ টুর্নামেন্ট এনবিএল জিতেছেন। অবসরের পর থেকে জনসন প্রায় ৩০ বছর এইচআইভি প্রতিরোধে জনসচেতনা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
মেসি ২০২৩ সালের জুনে পিএসজি থেকে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছেন তিনি। তবে মেসিকে পদক দেওয়া হচ্ছে শিশু স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সম্প্রসারণে লিওনেল মেসি ফাউন্ডেশন ও ইউনিসেফের মাধ্যমে কাজ করার জন্য।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে তত্কালীন প্রেসিডেন্ট ওবামাও যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম প্রদান করে সম্মানিত করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন ও বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে।