নেপালের (Nepal Plane Crash) পোখরায় ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। ৭২ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়েছে ইয়েতি এয়ারলাইনসের ডবল-ইঞ্জিন ATR-72 বিমান। যাত্রীদের কারওরই আর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। মোট ৭২ জন যাত্রীই মৃত বলে সূত্রে খবর। এখনও পর্যন্ত ৩১টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। বিমানে ৭২ জন যাত্রীর মধ্যে ৬৮ জন ছিলেন যাত্রী। যারমধ্যে ২ শিশুও ছিল। আর বাকি ৪ জন কেবিন ক্রু সদস্য।
নেপালের পোখরায় ভেঙে পড়া বিমানে ছিলেন বেশ কয়েকজন ভারতীয়ও। ডবল ইঞ্জিনের ATR-72 বিমানটি সকাল ১০টা ৩৩ মিনিট নাগাদ কাঠামাণ্ডু বিমানবন্দর থেকে টেক অফ করে। কাঠমাণ্ডু থেকে পোখরা যাচ্ছিল বিমানটি। ওড়ার মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। পোখরা বিমানবন্দরের অবতরণের আগে বিমানটি ভেঙে পড়ে। পোখরা বিমানবন্দরে নামার আগে সেতি নদীর তীরে বিমানটি ভেঙে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সেটিতে আগুন ধরে যায়। বিমানটির বয়স ছিল ১৫ বছর।
একটি বাড়ির ছাদ থেকে তোলা সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে বিমানটি আকাশে উড়তে উড়তে আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে এবং উলটে যাচ্ছে। আর তারপরই সব শেষ। বিকট আওয়াজ করে সেটি ভেঙে পড়ল মাটিতে। ততক্ষণে অবশ্য ক্যামেরার পিছনে থাকা ব্যক্তিও হকচকিয়ে গিয়েছেন। চারপাশ থেকে প্রত্যক্ষদর্শীদের চিল চিৎকারের আওয়াজও শোনা গিয়েছে ভিডিয়োটিতে। হাড়হিম করা সেই দৃশ্য এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
আরও পড়ুন: Miss Universe 2022: হার ভারতের ‘সোনার পাখি’ দিভিতার, মুকুট জয় মার্কিন সুন্দরীর
Video of what seems to be moments before the crash of Yeti Airlines🇳🇵 ATR72 carrying 72 passengers near Pokhara Airport#aerowanderer #aviation #avgeek #nepal #yetiairlines pic.twitter.com/hk12Edlvpf
— Aerowanderer (@aerowanderer) January 15, 2023
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র সুদর্শন ভাটুলা জানিয়েছেন, বিমানে ছিলেন মোট ১০ জনের বেশি বিদেশি নাগরিক। অভিশপ্ত বিমানে ছিলেন ৫ ভারতীয়, ৪ রুশ, ১ আইরিশ, ২ কোরিয়া, ১ জন আর্জেন্টিনিয়া, ১ জন ফ্রান্স ও ৫৩ জন নেপালের নাগরিক। কাঠমান্ডু থেকে পোখরা মাত্র ২৫ মিনিটের রাস্তা। কিন্তু অবতরণের ৫ মিনিট আগেই বিমানটি ভেঙে পড়ে।
প্রসঙ্গত, নেপালের এয়ার সেফটি রেকর্ড খুবই বাজে। ৩০ বছরে ৩০-র বেশি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা (Plane Crash) ঘটেছে এই নেপালেই (Nepal)। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এর পিছনে রয়েছে মূলত তিনটি কারণ। প্রথমত, দুর্গম পার্বত্য উপত্যকায় অবস্থিত নেপাল। বিশ্বের উচ্চতম ১৪টি পর্বত শৃঙ্গের মধ্যে ৮টি নেপালেই অবস্থিত। যার মধ্যে বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভরেস্ট তো অবশ্যই। দ্বিতীয়ত, পার্বত্য অঞ্চল হওয়ার জন্যই নেপালের আবহাওয়া ঘন ঘন বদলায়। তৃতীয়ত, কুয়াশার দাপট। বিমান দুর্ঘটনার সিংহভাগই ঘটেছে কুয়াশার জেরে। শীতকালে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় অনেক সময়ই উড়ান সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে পাহাড়ের গায়ে। তবে এবার এইসবের সঙ্গে আরও একটি অভিযোগ সামনে আসছে। বলা হচ্ছে, কাঠমান্ডুর আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় মেয়াদ উত্তীর্ণ বিমান চালানোর অভিযোগ উঠেছে। ফলে এবারেও তেমন কোনও কারণ ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছ।
আরও পড়ুন: British Airways: বিমানসেবিকাদের জন্য হিজাব চালু করছে ব্রিটিশ সংস্থা