দু’দিনের বিরতির পর সোমবার শুরু হল পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশন। আর শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করল সম্মিলিত বিরোধী পক্ষ। কিন্তু সেই প্রস্তাব ঘিরে বিতর্কের আগেই আগামী বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) পর্যন্ত সভা মুলতুবি ঘোষণা করলেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার সংসদে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন বিরোধী দলনেতা শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, ‘অধিবেশন কক্ষে এই প্রস্তাব পেশের জন্য আপনি (ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি) যাতে অনুমতি দেন, সেই আর্জি জানাচ্ছি।’ তারপর ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হবে কিনা, তা নিয়ে ভোটাভুটি হয়।
আরও পড়ুন: কাগজের অভাবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য শ্রীলংকায় সমস্ত পরীক্ষা বাতিল
জাতীয় সংসদের নিয়ম অনুযায়ী, মোট সংসদের ২০ শতাংশের ভোট পেলে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার আর্জি গৃহীত হয়। অর্থাৎ প্রস্তাবের পক্ষে ৬৮ টি ভোটের দরকার ছিল। সেই প্রয়োজনীয় সংখ্যার থেকে ১০০-র বেশি ভোট পড়েছে। ডেপুটি স্পিকার জানান, প্রস্তাব পেশের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৬১ জন সাংসদ। তারপর বৃহস্পতিবার বিকেল চারটে পর্যন্ত জাতীয় সংসদের অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যেই পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ সোমবার দাবি করেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর বার্তা স্পষ্ট হওয়ায় ভোটাভুটির আগেই ইস্তফা দিতে পারেন ইমরান। পরবর্তী জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর নেতা শাহবাজ শরিফকে দেখা যেতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কয়েকটি খবরে।
এরই মধ্যে সোমবার পাকিস্তান মুসলিম লিগ (কায়েদ)-এর তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইমরান সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দলের ৫ জন সদস্য রয়েছেন। ৩৪২ আসনের পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ‘জাদু সংখ্যা’ ১৭২। ইমরানের নিজের দল পিটিআই-এর সদস্য ১৫৫ জন। বুধবার ইমরান সরকারের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি)-এর ৭ এবং বালুচিস্তান আওয়ামি পার্টি (বিএপি)-র ৫ সদস্য রয়েছেন। রবিবার সমর্থন প্রত্যাহারকারী জামহুরি ওয়াতন পার্টির রয়েছেন এক সদস্য।
অন্য দিকে, বিরোধী পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর ৮৪ এবং পাকিস্তান পিপল্স পার্টি (পিপিপি)-র ৫৬ জন সদস্য রয়েছেন। সব মিলিয়ে সম্মিলিত বিরোধী জোটের সদস্য ১৬০-এরও বেশি। তা ছাড়া, ইমরানের দলের ১৫৫ জনের মধ্যে অন্তত ৩০ জন বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পাক সেনার তরফেও ইমরানকে ইস্তফার ‘বার্তা’ পাঠানো হয়েছে বলে সে দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০ মহিলা শিল্পীকে নিয়ে আরবি ক্যালিগ্রাফির বিশেষ প্রদর্শনী ইংল্যান্ডে