পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফের (Pervez Musharraf) স্বাস্থ্য নিয়ে বিভ্রান্তি। কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম তাঁর জীবনাবসানের খবর সম্প্রচার করলেও মুশারফের ঘনিষ্ঠেরা এখনও এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেনি। এই মুহূর্তে দুবাইয়ের আছেন প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ (former Pakistan President Pervez Musharraf)।
কয়েকদিন ধরেই দুবাইয়ের এক মার্কিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মুশারফ। কিন্তু শুক্রবার তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। শেষ পাওয়া খবরের মতে, দুবইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মুশারফের পরিবারের লোকজন। পারভেজ মুশারফের সরকারি টুইটার হ্যান্ডেলে তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাক্তন পাক রাষ্ট্রপতির শারীরিকভাবে অত্যন্ত সঙ্গীন অবস্থায় রয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। একের পর এক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। একইসঙ্গে এই অবস্থার সম্পূর্ণ নিরাময় যে সম্ভব নয় তাও জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
Message from Family:
He is not on the ventilator. Has been hospitalized for the last 3 weeks due to a complication of his ailment (Amyloidosis). Going through a difficult stage where recovery is not possible and organs are malfunctioning. Pray for ease in his daily living. pic.twitter.com/xuFIdhFOnc
— Pervez Musharraf (@P_Musharraf) June 10, 2022
আরও পড়ুন: Elon Musk-র বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ বিমান সেবিকার, মুখ বন্ধ রাখতে ২.৫ লাখ ডলার
১৯৪৩ সালে মুশারফের জন্ম হয় দিল্লিতে। করাচি ও তুরস্কের ইস্তানবুলে শৈশব কাটে প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্টের। লাহোরের ফরমান ক্রিশ্চিয়ান কলেজে মুশাররফ গণিত নিয়ে ভরতি হলেও পরিবারের অমতে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন ১৯৬১ সালে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে মেজর-জেনারেল মুশারফ একটি পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়কত্ব এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো বাহিনী ‘স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ’ এর প্রধান হন। তিনি পরে সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি এবং ডাইরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন্স ডাইরেক্টরেট ছিলেন। ১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসে পারভেজ মুশাররফের পদবী লেফটেন্যান্ট-জেনারেল থেকে পূর্ণ জেনারেল পদবীতে উন্নীত করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। পূর্ণ জেনারেল হিসেবে পারভেজ সেনাবাহিনী প্রধান এবং চেয়ারম্যান অব দ্যা জয়েন্ট চীফস অব স্টাফ কমিটির দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শরীফের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পারভেজের তর্কাতর্কি থাকায় শরীফ পারভেজকে সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জেনারেল পারভেজ এর জবাব হিসেবে নওয়াজ শরীফকে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন ; শরীফ গৃহবন্দী হন এবং তাকে রাওয়ালপিন্ডির সেন্ট্রাল জেলে আটকিয়ে রাখা হয়। ২০০৮ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি।
কিন্তু তারপর পরিস্থিতি পালটাতে শুরু করে। ২০০৭ সালে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপ ও বেআইনিভাবে জরুরি অবস্থা লগু করার নিয়ে ২০১৩ সালে মুশারফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তৎকালীন নওয়াজ শরিফ সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও পরে সেই সাজা মাফ করএ দেওয়া হয়। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন ও অন্যান্য আইনি জটিলতায় সাজা ঘোষণা ক্রমে পিছিয়ে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালে দেশ ছাড়েন প্রাক্তন পাক সেনাপ্রধান।
আরও পড়ুন: ফাঁস হয়েছিল Bedroom Video! প্রয়াত পাকিস্তানের ‘মিম কিং’ Aamir Liaquat Hussain