Pakistan: 29 Prime Ministers in 75 years, but no one could complete 5 years!

Pakistan: ৭৫ বছরে ২৯ জন প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু কেউই পূর্ণ করতে পারেননি ৫ বছর!

পাকিস্তানের ৭৫ বছরের ইতিহাসে কোনও প্রধানমন্ত্রীই তাঁর পাঁচ বছরের দায়িত্বের মেয়াদ শেষ কররে পারেননি! অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় এই ট্র্যাডিশন অব্যাহত রইল। ১৯৪৭ সাল থেকে মোট ২৯ জন প্রধানমন্ত্রীকে পেয়েছে পাকিস্তান। যাঁদের মধ্যে একজন এক বছরে দু’বার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। হত্যা করা হয় একজন প্রধানমন্ত্রীকে। ১৮ বার, তাঁদের অপসারণ করা হয়েছে বিভিন্ন কারণে। কখনও দুর্নীতির অভিযোগে, কখনও সরাসরি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, এমনকী ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে জোর করে পদত্যাগ করানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত মেয়াদ দুই সপ্তাহ, আর দীর্ঘতম মেয়াদ চার বছর দুই মাস। সবচেয়ে বেশি, তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মিয়া মুহাম্মদ নওয়াজ শরিফ, ১৯৯০ সালে, ১৯৯৭ সালে এবং ২০১৩ সালে।

দেখে নিন, ১৯৪৭ সাল থেকে কোন কোন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সময়ের আগেই শেষ হয়েছে। এতে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বা যারা অন্য প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ শেষ করেছেন তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত নেই।

১। লিয়াকত আলি খান। পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ১৯৪৭ সালের অগাস্টে দায়িত্ব নেন। ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর একটি রাজনৈতিক সমাবেশে নিহত হন।

মেয়াদ: চার বছর দুই মাস।

২। খাজা নাজিমুদ্দিন। ১৯৫১ সালের ১৭ অক্টোবর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁকে ধর্মীয় দাঙ্গায় উস্কানির অভিযোগে দেশের গভর্নর জেনারেল ১৭ এপ্রিল, ১৯৫৩ সালে বরখাস্ত করেন।

মেয়াদ: এক বছর ছয় মাস।

৩। মোহাম্মদ আলি বগড়া। ১৭ এপ্রিল, ১৯৫৩ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১১ অগাস্ট, ১৯৫৫ সালে পদত্যাগ করেন।

মেয়াদ: দুই বছর তিন মাস।

৪। চৌধুরী মোহাম্মদ আলি। ১৯৫৫ সালের অগাস্টে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের জেরে ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন।

মেয়াদ: এক বছর এক মাস।

৫। হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৫৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৮ অক্টোবর, ১৯৫৭ সালে অন্যান্য শক্তিকেন্দ্রগুলির সঙ্গে মতবিরোধের পরে দায়িত্ব থেকে সরতে বাধ্য হন।

মেয়াদ: এক বছর এক মাস।

৬। ইব্রাহিম ইসমাইল চুন্দ্রিগার। ১৯৫৭ সালের অক্টোবরে দায়িত্বে আসেন। সংসদে অনাস্থা ভোটের সম্মুখীন হয়ে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৭ সালে পদত্যাগ করেন।

মেয়াদ: দুই মাসের কম।

৭। মালিক ফিরোজ খান নূন। ১৯৫৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানে সামরিক আইন জারির কারণে বরখাস্ত করা হয় তাঁর সরকারকে।

মেয়াদ: ১০ মাসের কম।

৮। নুরুল আমিন। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরপরই ২০ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ কার্যালয় ত্যাগ করেন।

মেয়াদ: দুই সপ্তাহের কম।

৯। জুলফিকার আলি ভুট্টো। ১৪ অগাস্ট, ১৯৭৩ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৫ জুলাই, ১৯৭৭-এ একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং জেলে যান। সেখানে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

মেয়াদ: তিন বছর ১১ মাস।

১০। মুহাম্মদ খান জুনেজো। ১৯৮৫ সালের মার্চ মাসে কার্যভার গ্রহণ করেন। ২৯ মে, ১৯৮৮ সালে সামরিক প্রধান তথা রাষ্ট্রপতি তাঁকে বরখাস্ত করেন।

মেয়াদ: তিন বছর দুই মাস।

১১। বেনজির ভুট্টো। প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোর কন্যা এবং মুসলিম দেশের প্রথম মহিলা নেত্রী ২ ডিসেম্বর, ১৯৮৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দুর্নীতির অভিযোগে রাষ্ট্রপতি তাঁর সরকারকে ৬ আগস্ট, ১৯৯০ সালে বাতিল করেছিলেন।

মেয়াদ: এক বছর আট মাস।

আরও পড়ুন: ‘সুপ্রিম’ রায়ে শনিবার অনাস্থা ভোটের মুখে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

১২। মিয়া মুহাম্মদ নওয়াজ শরিফ। ১৯৯০ সালের ৬ নভেম্বর কার্যভার গ্রহণ করেন। ১৮ এপ্রিল, ১৯৯৩ সালে বেনজির ভুট্টোর মতো একই অভিযোগে রাষ্ট্রপতি তাঁর সরকারকেও বরখাস্ত করেন। যদিও কয়েক সপ্তাহ পরেই আদালতের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন মিয়া মুহাম্মদ এবং দায়িত্বে ফিরে আসেন, কিন্তু সামরিক বাহিনীর সঙ্গে মতপার্থক্যের পরে আবার পদত্যাগ করেন।

মোট মেয়াদ: দুই বছর সাত মাস।

১৩। বেনজির ভুট্টো। ১৯৯৩ সালের ১৯ অক্টোবর দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে আসেন বেনজির। ৫ নভেম্বর, ১৯৯৬ সালে অপশাসনের অভিযোগে আবারও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বরখাস্ত হন।

মেয়াদ: তিন বছরের সামান্য বেশি।

১৪। নওয়াজ শরিফ। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭-এ দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসেন। ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর পাকিস্তানের ইতিহাসে তৃতীয় সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত হন।

মেয়াদ: দুই বছর আট মাস।

১৫। মীর জাফরুল্লাহ খান জামালি। ২০০২ সালের নভেম্বরে সামরিক শাসনের সময় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২৬ জুন, ২০০৪ সালে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মতবিরোধের পর পদত্যাগ করেন।

মেয়াদ: এক বছর সাত মাস।

১৬। ইউসুফ রাজা গিলানি। ২০০৮ সালের ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে তাঁকে ‘আদালত অবমাননার’ অভিযোগে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট অযোগ্য ঘোষণা করে।

মেয়াদ: চার বছর এক মাস।

১৭। নওয়াজ শরিফ। ৫ জুন, ২০১৩ সালে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২৮ জুলাই, ২০১৭ সালে সম্পত্তি গোপন করার অভিযোগে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তাকে বরখাস্ত করে।

মেয়াদ: চার বছর দুই মাস।

১৮। ইমরান খান। ১৮ অগাস্ট, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়।

মেয়াদ: তিন বছর সাত মাস।

আরও পড়ুন: Imran Khan: ‘ফের স্বাধীনতার লড়াই শুরু হল’, হারের পর প্রথম মন্তব্য ইমরান খানের