ভারতে ঘৃণাভাষণ উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করল আমেরিকা। বুধবার আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বিশ্বে ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট (রিলিজিয়াস ফ্রিডম রিপোর্ট) প্রকাশ করেন। সবমিলিয়ে ২০০টি দেশের সমীক্ষার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। বুধবার সেই রিপোর্ট প্রকাশ করেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন। সেখানে বলা হয়েছে, যেভাবে ভারতে ঘৃণাভাষণ বাড়ছে সেটা যথেষ্ট উদ্বেগের। সেই সঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি এবং উপাসনাস্থলও ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।
বিদেশ দপ্তরের এই রিপোর্ট প্রকাশ করতে গিয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি ভারতে ধর্মান্তর বিরোধী আইনগুলো আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বাড়ছে ঘৃণাভাষণ। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি বা উপাসনাস্থল ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। রীতিমতো কষ্ট করে ধর্মীয় স্বাধীনতা বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে সংখ্যালঘুদের।” রিপোর্টে বলা হয়েছে, হিংসা থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এই প্রথমবার নয়। আগেও ভারতে (India) ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা (USA)। সেদেশের আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন তথা USCIRF সুপারিশ করেছিল, ‘একটি বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করা হোক ভারতকে। তাদের অভিযোগ, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা গুরুতর ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, টানা চারবার এমন উদ্বেগ প্রকাশ করে ওই কমিশন। কিন্তু সেই রিপোর্ট নাকচ করে ভারতের বিদেশমন্ত্রক।
কেবল ধর্মীয় স্বাধীনতা নয়, সিএএ কার্যকরেরও নিন্দা করেছিল মার্কিন বিদেশ দপ্তর। সেদেশের তরফে বলা হয়েছিল, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেটা নিয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত। ভারতে কীভাবে এই আইন কার্যকর হবে, সেদিকে কড়া নজর রাখছি। তবে আমেরিকার সাম্প্রতিক রিপোর্ট নিয়ে এখনও ভারতের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রায় সব দলের বেশ কয়েক জন নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে ঘৃণাভাষণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাজস্থানের একটি নির্বাচনী জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয় যে, প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বিভাজনে উস্কানি দিচ্ছেন। বিজেপি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা কংগ্রেসকেই আক্রমণ করে।