প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং বিদেশসচিব লিজ ট্রাস, ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এখন এই দু’জন। চূড়ান্ত নির্বাচনে তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসতে পারবেন। জায়গা নেবেন বরিস জনসনের। সুনাক কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের মধ্যে ভোটের সব রাউন্ডে জিতেছেন। কিন্তু, ট্রাসই এখন পর্যন্ত সরকারি দলের ২ লক্ষ সদস্যের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে মনে করছে একটি মহল।
প্রথম চার রাউন্ডেই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, চূড়ান্ত রাউন্ডে ঋষি সুনাক পৌঁছবেনই। প্রশ্ন ছিল, কে হবেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। শেষ পর্যন্ত ঋষির সঙ্গে লড়াই হতে যাচ্ছে লিজ ট্রাসের। পঞ্চম রাউন্ডের ভোটাভুটিতে ছিটকে গেলেন আর এক মহিলা প্রতিদ্বন্দ্বী পেনি মডান্ট। এই রাউন্ডে কনজারভেটিভ বা টোরি এমপিদের মধ্যে ১৩৭ জন ভোট দিয়েছেন ঋষিকে। লিজ পেয়েছেন ১১৩ ভোট। পেনি ১০৫টি ভোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় থেকে।
শেষ নির্বাচনে সদস্যরাই তাঁদের দলের নেতা বা নেত্রীকে বেছে নেবেন। একসপ্তাহ ধরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলবে সুনাক ও ট্রাসের মধ্যে। ৫ সেপ্টেম্বর ফলাফল ঘোষিত হবে। বিজয়ী যেই হোন না-কেন, তাঁকে গত কয়েক দশকের মধ্যে ব্রিটেনের সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, এখন ব্রিটেনের মুদ্রাস্ফীতি বার্ষিক ১১% ছুঁতে চলেছে। বৃদ্ধি থমকে গিয়েছে। শিল্প বাড়লেও ডলারের তুলনায় পাউন্ডের দর এখন ঐতিহাসিক ভাবে সবচেয়ে কম। পাশাপাশি, জনসনের জমানায় ট্রাসের মদতেই ব্রিটেন ব্রেক্সিট-পরবর্তী আলোচনায় ব্রাসেলসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আইনি পদক্ষেপে জড়িয়ে ভবিষ্যতের বাণিজ্য সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলেছে। এই সব বিষয়গুলোও ভোটারদের প্রভাবিত করবে।
আরও পড়ুন: আদিবাসী ভাষায় কথা! ‘অপরাধে’ কিশোরকে ক্লাসেই জীবন্ত জ্বালিয়ে দিল সহপাঠীরা!
প্রথম থেকে পঞ্চম রাউন্ড পর্যন্ত লড়াইয়ে ভোট দিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরাই। আসল লড়াইটা হতে যাচ্ছে এ বার। শুধু ব্রিটেনের হাউস অব কমন্সে নির্বাচিত দলীয় এমপিরাই নন, এ বার চূড়ান্ত পর্বে ভোট দেবেন কনজারভেটিভ পার্টির দেড় লক্ষাধিক সদস্য। এই সংখ্যা কত তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। ২০১৯ সালে বরিস জনসনকে নির্বাচিত করার সময় দলের সদস্য সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ৬০ হাজার। বিবিসির ধারণা, এই সংখ্যা এ বার বেড়েছে।
যদিও বুকিদের বাজিতে ঋষি সুনাকের পক্ষে দর এখনও পর্যন্ত খারাপ। কারণ হিসাবে ঋষির বর্ণ-পরিচয়ের কথা উঠে আসছে। এখনও পর্যন্ত কোনও অশ্বেতাঙ্গ ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী হননি। যে দেড় লক্ষাধিক কনজারভেটিভ সদস্যের ভোট এ বার দুই প্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, তাতে অশ্বেতাঙ্গ ভোটার নগণ্য। ২০১৯ সালে ছিল তিন শতাংশের মতো। তবে সত্যিই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি প্রধানমন্ত্রী হলে, তা ইতিহাস তৈরি করবে সন্দেহ নেই। ব্রিটেনের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে আমেরিকার বারাক ওবামার সঙ্গে তাঁর নাম উচ্চারিত হবে। আর তিনি হারলে, ব্রিটেন তার ইতিহাসে পাবে তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রীকে।
আরও পড়ুন: Padma bridge: পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার জন্য ‘ছোট বোন’ মমতাকে চিঠি হাসিনার