রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রায় ৫ সপ্তাহের মাথায় পূর্ব ইউরোপে শান্তি ফিরতে চলেছে। মঙ্গলবার তুরস্কে আয়োজিত শান্তি বৈঠকের পর এই ইঙ্গিত দিলেন রুশ এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। এদিন থেকেই কিয়েভ এবং চেরনিহিভ দখল অভিযান থেকে সরে আসতে শুরু করল রুশ সেনা। তবে এত দেশের অনুনয়-বিনয়, হুমকি, হুঁশিয়ারি সত্বেও যুদ্ধেবিরতি টানেনি পুতিন বাহিনী। কিন্তু তুরস্কের মধ্যস্থতায় কেন সেই পথে হাঁটল মস্কো? সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজছে আন্তর্জাতিক মহল।
ঘটনাচক্রে, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো-র গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তুরস্ক। যে নেটো-তে যোগদানের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তৎপরতাকে যুদ্ধের ‘অন্যতম কারণ’ হিসেবে প্রকাশ্যে চিহ্নিত করেছে মস্কো! এই পরিস্থিতিতে কেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন দখলের অভিযানে সাময়িক ইতি টানতে রাজি হলেন, তার নানা ‘ব্যাখ্যা’ শোনা যাচ্ছে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মুখে। আর সেই সঙ্গে অনিবার্য ভাবে উঠে আসছে তুরস্কের ভূমিকার কথা।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটো দেশগুলিকে একজোট করতে পোল্যান্ডে বাইডেন
অনেকের মতে, রাশিয়ার উপর তুরস্কের এই প্রভাবের পিছনে রয়েছে ভৌগলিক অবস্থান। রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রাইমিয়ার সেবাস্তিপোল বন্দরের সঙ্গে ইউরোপের জলপথ যোগাযোগের একমাত্র পথ হল কৃষ্ণসাগর হয়ে তুর্কী প্রণালীর মাধ্যমে ভূমধ্যসাগরের সাথে সংযোগ ঘটা এই কৃষ্ণ সাগরের তীরে পূর্ব ইউরোপের এবং ককেশাসের ৭ টি দেশ রয়েছে। রাশিয়ার হাতে থাকা এক মাত্র সেবাস্তিপোল বন্দরই উষ্ণ স্রোতের কারণে সারা বছর সচল থাকে। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তুর্কি প্রণালী বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যেই তুরস্কের কাছে আবেদন জানিয়েছে নেটো-র একাধিক সদস্যরাষ্ট্র। ফলে শঙ্কা ছিল মস্কোর। তাই কোনওভাবেই আঙ্কারাকে চটাতে নারাজ পুতিনের দেশ।
এদিকে, পূর্ব ইউরোপে শর্তাধীনে শান্তি ফিরতে পারে এই ঘোষণা হওয়া মাত্রই কমেছে বিশ্ববাজারে তেলের দাম। পাশাপাশি চাঙ্গা হয়েছে ইউরোপের একাধিক দেশের শেয়ার বাজার। অপরদিকে, জানা গিয়েছে শান্তি আলোচনায় চূড়ান্ত সিলমোহর বসাতে মুখোমুখি বসতে পারে পুতিন-জেলেনস্কি। সেই সাক্ষাৎ যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আরও বিপর্যয় আটকাতে পারবে এই দুই পড়শি দেশ।
আরও পড়ুন: Russia-UKraine War: যুদ্ধ শেষের ইঙ্গিত! সেনা কমানোর ঘোষণা করল মস্কো