ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমা, ভ্যাকুয়াম বোমা ও অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছে রাশিয়া (Vacuum Bomb in Russia Ukraine War) ৷ অভিযোগ মানবাধিকার দল ও ইউক্রেনে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের (Ukraine envoy to US) ৷ নানা সময়ে এই অস্ত্র ও বোমার তীব্র নিন্দা করেছে আন্তর্জাতিক মহল ৷
সোমবার আমেরিকায় নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওকসানা মারকারোভা মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারপরই তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনে একটি ভ্যাকিউম বোমা ব্যবহার করেছে রাশিয়ার সেনা। মারকারোভার কথায়, “আজ ওরা (রাশিয়া) একটি ভ্যাকিউম বোমা ব্যবহার করেছে। ইউক্রেনের প্রচণ্ড ক্ষতি করতে চাইছে রাশিয়া।” বলে রাখা ভাল, গতকাল বেলারুশে টানা ৫ ঘণ্টা বৈঠক হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে। দু’পক্ষই দ্বিতীয় দফা আলোচনার জন্য রাজি হয়েছে বলে রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক সূত্রের খবর। তবে বৈঠক শেষ হতেই ফের রাশিয়া হামলা চালিয়েছে বলে খবর। কিয়েভ ও খারকভে আছড়ে পড়ছে মিসাইল ও গোলা। ধসে পড়ছে বাড়িঘর। দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। এহেন পরিস্থিতিতে ভয়ানক ‘ভ্যাকিউম বম্ব’ ব্যবহার করার দাবি চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
সমর বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্যাকিউম বম্ব আসলে একটি থারমোবেরিক বোমা। অর্থাৎ এই বোমা আশপাশের বাতাস থেকে সমস্ত অক্সিজেন শুষে নেয়। তারপরই ঘটে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। তৈরি হয় বিরাট অগ্নিগোলক। বিস্ফোরণে প্রচণ্ড উত্তাপের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয় ভয়ংকর শক ওয়েভ। যার গতি এত তীব্র যে বাড়িঘর থেকে মানুষ– সমস্ত কিছু মুহূর্তের মধ্যে খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ওই বোমার আঘাতে এতটাই উত্তাপ ও শক ওয়েভ তৈরি হয় যা একটি মানুষকে মুহূর্তে বাষ্পে পরিণত করে। ধ্বংস করার ক্ষমতার নিরিখে ভ্যাকিউম বোমার কাছে আর পাঁচটা সাধারণ বোমা শিশুমাত্র।
মঙ্গলবার ষষ্ঠ দিনে প্রবেশ করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এদিন সকালে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বে ইভানকিভ শহরের সেনাঘাঁটিতে রাশিয়ার ট্যাঙ্কবাহিনী গোলাবর্ষণ করে। তাতে অন্তত ৭০ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ইউক্রেনের দাবি, এই পাঁচ দিনে রাশিয়ার হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত অন্তত সাড়ে তিনশো সাধারণ মানুষের। এর মধ্যে রয়েছে ১৪ জন শিশু।
সোমবার রাত থেকেই ইউক্রেনের শিল্প ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং অন্যতম বড় শহর খারকিভে নিরন্তর হামলা চালাতে শুরু করেছে রুশ বাহিনী। ট্যাঙ্কবাহিনীর গোলাবর্ষণে প্রায় তছনছ হয়ে গিয়েছে এই শহর। যা কিনা ইউক্রেনের অন্যতম শিক্ষাকেন্দ্রও বটে। বিদেশ থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই এই শহরে পড়াশোনা করতে আসেন এবং থাকেন। যাঁদের অনেকে এখনও রয়েছেন এই শহরে।