বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রবিবার আরও তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। ৫ অগাস্ট তিনি দেশ ছাড়ার পর গত ১৩ দিনে মোট ১০টি মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বেশিরভাগ মামলাতেই তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
রবিবার যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে তার একটিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৫ সালে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা তৎকালীন বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টার মূল ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। দ্বিতীয় মামলাটি ২০১৩ সালের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সেবার ঢাকার শাপলা চত্ত্বরে হেফাজতে ইসলামির কর্মী-সমর্থকদের উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর জমায়েতে থাকা অনেকেরই আর সন্ধান মেলেনি।
এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জয়পুরহাটে কলেজ ছাত্র নজিবুল সরকার ওরফে বিশাল গুলিতে নিহতের ঘটনায় জয়পুরহাট আদালতে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সেই মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রাক্তন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের-সহ ১২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, দায়ের হয়েছে আরও মামলা। রংপুরে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল–তাহির নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে ফল ব্যবসায়ী মেরাজুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় রংপুর মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ নেতা, সিটির কাউন্সিলর-সহ ২১ জনকে আসামি সাব্যস্ত করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত মোট ১০টি মামলা দায়ের হয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। প্রতিটি মামলাতেই আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের এবং একাধিক সাংসদের নাম রয়েছে। যেমন বাংলাদেশে ‘খেলা হবে’ স্লোগান চালু করা নারায়ণগঞ্জের সাংসদ শামিম ওসমানের নাম আছে হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি মামলায়।
আইনজ্ঞদের বক্তব্য, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করালে তাঁর বাকি জীবন জেলেই কেটে যেতে পারে। তবে সবই নির্ভর করছে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতির উপর। দেশে যে হিংসাত্মক পরিস্থিতি চলছে তাতে এই সময় হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে রাজি হবে না ভারত। এই ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ একাধিক দেশের সমর্থন নয়াদিল্লির পাশে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, প্রাণ সংশয় হতে পারে জানা সত্ত্বেও কাউকে জোর করে ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের পরিপন্থী।