বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে দেশ ছেড়েছেন। আপাতত ভারতে থাকলেও এখনও পর্যন্ত স্থায়ী আশ্রয় পাননি তিনি। এর মধ্যেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করল। এইসঙ্গে হাসিনা সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমনকী আওয়ামি সাংসদদের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মহম্মদ আলী রেজা সিদ্দিকী জানিয়েছেন , ‘ কূটনৈতিক পাসপোর্ট পাওয়ার যোগ্যতা যাঁদের আছে, তাঁরা যদি সেই পদে না থাকেন, প্রধানমন্ত্রী-সহ মন্ত্রিসভার সদস্য়, সাংসদ সদস্য়, প্রধানমন্ত্রীর যে উপদেষ্টারা ছিলেন, যাঁরা এখন নেই তাঁদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হবে। এছাড়া চুক্তিভিত্তিক অনেকে ছিলেন যাঁরা সচিব পদমর্যাদার এবং এমন মর্যাদায় যেখানে ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্টের য়োগ্যতা আছে, তাঁদের চুক্তি বাতিল হয়েছে। অনেক সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। তেমন ক্যাটাগরির যাঁরা ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট নিয়েছেন এবং বর্তমানে ওই পদে নেই , সেই কূটনৈতিক পাসপোর্টগুলো বাতিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে’।
অতিরিক্ত সচিব জানান, ‘পাসপোর্টগুলি সিস্টেম থেকে মুছে ফেলতে হবে। যদি কেউ পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেন,তাহলে তো হয়েই গেল। কিন্তু যদি ফিরিয়ে দেন, সেকারণেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যাতে ফিরিয়ে না দিলেও পাসপোর্ট কার্যকরী না থাকে’। গণ অভ্যুথানের জেরে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে বোন রেহানাকে নিয়ে ভারতে চলে আসেন শেখ হাসিনা। নিজের দেশ ছাড়ার আগে দেন প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফাও। তারপর থেকেই বাংলাদেশ চালাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। যার প্রধান হয়েছেন নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূস। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে হাসিনার বিরুদ্ধে নানা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাই তিনি দেশে ফিরলেও পড়তে পারেন বিপাকে।
এর মাঝেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করায় চিন্তা আপও বাড়ল মুজিব কন্যার। যদিও ভারতে কোন ‘ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে’ রয়েছেন হাসিনা সেই কথা এখনও পর্যন্ত জানায়নি নয়াদিল্লি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকার সৌজন্যে হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছিল। নয়াদিল্লি-ঢাকা চুক্তি অনুযায়ী কূটনৈতিক বা সরকারি পাসপোর্ট থাকলে বাংলাদেশের কোনও নাগরিক অন্তত ৪৫ দিন ভিসা ছাড়াই ভারতে অবস্থান করতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে চাপে পড়লেন হাসিনা। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।