শেখ হাসিনার ভিসা প্রত্যাহার করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমনটাই খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। ফলে আমেরিকায় আশ্রয় চাওয়ার কোনও সুযোগ আপাতত আর রইল না বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীর কাছে। উল্লেখ্য, আমেরিকাতেই বর্তমানে বসবাস করেন শেখ হাসিনার পুত্র সাজিব ওয়াজেদ জয়। তিনি ভার্জিনিয়াতে থাকেন।
এ দিকে, ব্রিটেনে বসবাস করেন শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং ভাইঝি টিউলিপ সিদ্দিক। সেখানেই প্রাথমিকভাবে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল শেখ হাসিনার। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, হাসিনার আবেদন বিবেচনা করে দেখছে ব্রিটেন। মঙ্গলবার ব্রিটিশ বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র জানিয়েছে, কোনও ব্যক্তিকে রাজনৈতিক আশ্রয় বা অস্থায়ী শরণার্থী হিসেবে অনুমতি দেওয়ার বিধি অভিবাসন আইনে নেই। কিয়ার স্টার্মার নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া ব্যক্তি প্রথম নিরাপদ আশ্রয় পাওয়া দেশের কাছে এই অনুমতি চাইতে পারেন। একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাদের প্রয়োজন তাদের সুরক্ষা দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে আমাদের। কিন্তু, অস্থায়ীভাবে বেড়াতে আসা কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিধি নেই।
অর্থাৎ ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য অনুযায়ী, লন্ডনে পৌঁছ যাওয়ার পর আশ্রয় চাইতে পারবেন না শেখ হাসিনা। আগে থেকে তাঁকে আবেদন জানাতে হবে। হাসিনা সেই আবেদন এখনও করেননি। পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের আগে সাময়িক ধাক্কা কাটানোর জন্য ভারতের থেকে তিনি আপাতত কিছুটা সময় চেয়েছেন। সে সময় ভারত তাঁকে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ দেশে থেকেই পরবর্তী গন্তব্যের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী। তবে আগামী গন্তব্যের তালিকা থেকে আমেরিকা যে বাদ পড়ল, তা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশের ডেইলি সান এক খবরে জানিয়েছে, ভারত হাসিনাকে অন্তর্বর্তীকালীন আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে। এমনকী তাঁর বিমানে জ্বালানি ভরে দেওয়া কিংবা পরিবহণ সুবিধাও দিতে পারে নয়াদিল্লি। কিন্তু ভারত হাসিনাকে দীর্ঘদিন ধরে কিংবা চিরস্থায়ী আশ্রয় দিতে মনেপ্রাণে নারাজ। কারণ তা হলে এদেশেও পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, হাসিনা ও তাঁর বোন রেহানা এনিয়ে দ্বিতীয়বার ভারতের শরণাপন্ন হলেন। ১৯৭৫ সালে তাঁদের বাবা মুজিবুর রহমান হত্যার সময় তাঁরা জার্মানির বার্লিন থেকে গোপনে এসে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পান্ধারা রোডে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর সেফ হাউসে ইন্দিরা গান্ধী সরকারের অতিথি হয়ে প্রায় বছর ছয়েক ছিলেন তাঁরা।