মারণ ক্যান্সারের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হলো ইতালির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনিকে। সোমবার মিলানের সান রাফায়েল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন ৮৬ বছর বয়সী মিডিয়া ব্যরন কাম রাজনীতিবিদ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রসেতো বলেছেন, ‘সিলভিও বারলুসকোনির মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান ঘটেছে। তাঁর মৃত্যু দেশের পক্ষে অপূরণীয় ক্ষতি।’
একসময়ে ইতালির তৃতীয় সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন বারলুসকোনি। তিন দফায় মোট ৯ বছর ইতালির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি সময়ের জন্য ইতালির রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, বারলুসকোনি লিউকেমিয়ায় ভুগছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। সম্প্রতি তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এই আবহে আজ মিলানের সান রাফায়েল হাসপাতালে মারা যান তিনি।
১৯৩৬ সালে মিলানে জন্মগ্রহণ করেন বারলুসকোনি। প্রথম জীবন শুরু করেছিলেন সেলসম্যান হিসেবে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বিক্রি করতেন। পরে বহুতল আবাসন নির্মাণের ব্যবসা শুরু করেন। বেশ কয়েক বছর পরে মিডিয়া ব্যবসায় নাম লেখান। ইতালির সবচেয়ে বড় সংবাদমাধ্যমের কর্ণধার হযে ওঠেন।
নব্বইয়ের দশকে রাজনীতিতে জড়িয়ে পরেন। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো ইতালির প্রধানমন্ত্রী হন। তার পরে কয়েক দফায় আরও তিন বার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বারলুসকোনির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে।
তাঁর ‘বুঙ্গা বুঙ্গা’ সেক্স পার্টি নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। বিতর্ক তাঁকে আদালত পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিল। ২০১৩ সালে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে পতিতাবৃত্তির জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছিল ইতালির একটি আদালত।
শাস্তি হিসেবে ৬ বছরের জন্য বারলুসকোনিকে ইতালির রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করা হয়। ইসলাম বিরোধী, পুরুষতান্ত্রিক ডানপন্থী রাজনৈতিক নেতা হিসেবেই চিরকাল পরিচিত ছিলেন বারলুসকোনি।