শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি হল। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, দেশে যে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা তৈরি হয়েছে তাতে জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। বুধবার সকাল থেকে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। প্রেসিডেন্ট দেশ পালিয়েছেন, খবর পাওয়া মাত্রই হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কার্যালয়ের মিছিল করে গিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন। পুলিস প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলেও পরে সেনা নামাতে হয়। এরপরই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
গোতাবায়া রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালানোর পরই অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। জনরোষ উপেক্ষা করেই বুধবার অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের শপথ নিলেন তিনি। গোতাবায়া দেশ ছেড়ে পালিয়ে আপাতত মালদ্বীপে রয়েছেন। বুধবার রাজাপক্ষে ইস্তফা দেবেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন স্পিকার। কিন্তু তার আগেই দেশ ছেড়েছেন তিনি। তবে রাজাপক্ষে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নিজের পরিবারকে নিরাপদ স্থানে না নিয়ে যেতে পারলে ইস্তফা দেবেন না। এখন দেখার, দেশ ছাড়ার পরে নিজের ইস্তফার কথা আলাদা করে ঘোষণা করেন কিনা গোতাবায়া।
আরও পড়ুন: Texas: ট্রাক থেকে উদ্ধার ৪৬ জনের মরদেহ, শরণার্থী নাকি মানুষ পাচারের চেষ্টা?
তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর পরই বিক্রমসিঙ্ঘে যে প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব সামলাবেন, সেটা আঁচ করতে পেরেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তাই তাঁরা হুঁশয়ারি দিয়েছিলেন যে, বিক্রমসিঙ্ঘে যেন কোনও ভাবেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব না নেন। স্থানীয় সময় দুপুর ১টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ইস্তফা না দিলে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
#WATCH Military personnel use tear gas shells to disperse protestors who scaled the wall to enter Sri Lankan PM's residence in Colombo pic.twitter.com/SdZWWRMwTn
— ANI (@ANI) July 13, 2022
বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য হচ্ছে, তিন পুরুষ ধরে চলা পরিবারতান্ত্রিক সাম্রাজ্যকে দেশ থেকে উৎখাত করা। কিছু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, বিক্ষোভ-আন্দোলনের পারদ যেভাবে চড়ছে তাতে হয়তো গোটা পরিবারকেই দেশছাড়া হতে হবে। কারণ লড়াইটা চলতি সরকারের বিরুদ্ধে নয়, কয়েক দশক ধরে চলা আকণ্ঠ দুর্নীতিতে ডুবে থাকা এক পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে।
দক্ষিণ এশিয়ায় এরকম কোনও রাজনৈতিক পরিবারতন্ত্র নেই, যাদের কয়েক দশকের সাম্রাজ্য চালানোর রেকর্ড আছে। ২০১০-১৫ সালে মাহিন্দা রাজাপক্ষের দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর তাঁর পরিবারের অন্তত ৪০ জন আত্মীয় সরকারের বিভিন্ন পদ ও মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। পরের ভোটে মাহিন্দার পরাজয়ের পর তাঁর অধিকাংশ সরকারি কর্মী ও মন্ত্রী আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত হয়।
আরও পড়ুন: Rishi Sunak : ব্রিটেনের PM হবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি? জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে মিথ্যে তথ্য