বাজারে মেলা অতি সস্তা ড্রোন দিয়ে ইসরাইলের ঘুম হারাম কর দিয়েছে হামাস(Hamas)। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ’-এর (আইএনএনএস) গবেষক লিরান আনতেবি বুধবার বলেন, ‘এ ধরনের ড্রোনের প্রযুক্তি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা খুব সরল। শিশুরাও তা ব্যবহার করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে হামলা চালাতে পারবে।’’ বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের কোনও ভাল দোকানে মেলা যন্ত্রাংশ কিনেই তা তৈরি করা সম্ভব। আর সেই ড্রোনবাহী উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক? পশ্চিমী শক্তির অনুমান, হামাসকে তা জুগিয়েছে ইরান।
গত শনিবার ভোর থেকে আক্রমণ শুরু করে হামাস। চলতে থাকে লাগাতার রকেট হামলা। পাশাপাশি প্যারাগ্লাইডার বাহিনীও ঢুকে পড়ে সীমান্তে। কিন্তু এরই সঙ্গে ইজরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে ছোট ড্রোনগুলিও। রাডারের নজরদারি এড়িয়ে হামলা চালায় তারা। সেখান থেকে হ্যান্ড গ্রেনেড ও মর্টার ছুড়ে মারতে থাকে লক্ষ্যে। কয়েকটি মেরকাভা ট্যাঙ্কও ধ্বংস করে সেগুলো। আর এর ফলে উপগ্রহ সংযোজক টাওয়ার ধ্বংস করে দিয়ে তারা রীতিমতো যোগাযোগ ছিন্ন করে দেয় ইসরাইলি সেনার মধ্যে।
রকেট এবং প্যারাগ্লাইডার বাহিনীর পাশাপাশি সে দিনের হামলায় ওই ড্রোনও ব্যবহার করেছিল হামাসের আল কাসিম ব্রিগেড। বিস্ফোরক বোঝাই ওই ছোট্ট ড্রোনগুলি সহজেই রাডারের নজরদারি এড়িয়ে ‘আত্মঘাতী’ হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে। তার পরে গত ৭২ ঘণ্টায় ইজ়রায়েল সেনার বিশ্বখ্যাত কয়েকটি মেরকাভা ট্যাঙ্কও ধ্বংস করেছে হামাসের খুদে ড্রোনের বাহিনী। তছনছ করেছে উপগ্রহ সংযোজক টাওয়ার। আর তার পরেই গাজা সীমান্তে শ্লথ হয়ে গিয়েছে নেতানিয়াহু ফৌজের অগ্রগতি।
নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, হামাস তার আক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে ড্রোন থেকে গোলাবারুদ ফেলে অন্তত চারটি যোগাযোগ টাওয়ারের যোগাযোগ ব্যবস্থা “অকেজো” করে দেয়। এর ফলে ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের দেয়াল ভাঙা ও সীমান্ত লঙ্ঘন দেখতে পায়নি। এতে হামাসের কাজ প্রত্যাশার চেয়ে সহজ হয়ে ওঠে। হামাস বিস্ফোরক এবং বুলডোজার ব্যবহার করে প্রায় ১৫০০ যোদ্ধার জন্য প্রায় ৩০টি ফাঁক তৈরি করে। হামাসের অভিযানের পর ইসরাইলি সেনাদের বিমান সমর্থন দিতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তারা প্রথম দিকে বুঝতেই পারেননি, কতটা বড় অভিযান চালিয়েছে হামাস।