স্নানকে বরাবরই ভয় পেতেন তিনি। প্রায় অর্ধেক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এক ফোটাও জল গায়ে লাগাতে দেননি তিনি। ধারণা ছিল, জলের সংস্পর্শে এলেই মৃত্যু হবে তাঁর। সেই ধারণাই এবার সত্য প্রমাণিত হল। স্নান করার পরই মারা গেলেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা ব্যক্তি’ আমু হাজি। ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ইরানের এই ব্যক্তি।
তেহরান টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ ইরানের এই বাসিন্দা একটি খুপরিতে বসবাস করতেন। ছিলেন ভবঘুরে। মানুষের কাছ থেকে খাবার চেয়ে খেতেন। যেদিন খাবার পেতেন না, রাস্তার নোংরা কুড়িয়ে খেতেন। ধুমপানের জন্য ব্যবহার করতেন নোংরা ভর্তি একটি পাইপ। তাঁর ধারণা ছিল, পরিচ্ছন্নতা তাঁকে অসুস্থ করে তুলবে। সূত্রের খবর, মাসখানেক আগে গ্রামের বাসিন্দারা তাঁর মাথায় জল ঢেলে দেয়। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেশ কয়েক মাস অসুস্থ থাকার পর তিনি গত রবিবার মারা গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Bangladesh: মহালয়ায় পুজো দেওয়ার পথে ভয়াবহ নৌকাডুবি! মৃত অন্তত ২৪
বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা মানুষ হাজিকে নিয়ে ২০১৩ সালে একটি তথ্যচিত্র তৈরি হয়। তথ্যচিত্রটির নাম ছিল ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাইফ অফ আমু হাজি।’ সেই তথ্যচিত্রে তাঁর জীবন যাপনের একটা বড় অংশ তুলে ধরে। এরপর থেকেই তাঁর নানান ভিডিয়ো ভাইরাল হতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। যেখানে তাঁকে দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠেছিল নেটিজেনরা। এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন মারফত জানা গিয়েছে, তাঁর খাবার ছিল রাস্তায় পড়ে থাকা পশুপাখির মাংস এবং জলাশয়ের জল। সবচেয়ে প্রিয় খাবার ছিল সজারুর মাংস। অস্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি সিগারেট খাওয়ারও অভ্যাস ছিল এই ইরানি বৃদ্ধর। বেশ কিছুদিন আগেই তাঁর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল। যেখানে একসঙ্গে একাধিক সিগারেট টান দিচ্ছিলেন তিনি।
তবে এর থেকেও অবাক করা এক তথ্য সামনে এসেছে কয়েক বছর আগে। গ্রামবাসীরা জোর করেই একবার ডাক্তার দেখিয়েছিলেন তাঁকে। সেখান থেকেই বেশ কিছু টেস্ট করাতে দেন তিনি। এবং টেস্টের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এতদিন স্নান না করার পরও কোনওরকম গুরুতর রোগ বা কোনও ব্যকটেরিয়াঘটিত রোগ তাঁর শরীরে দানা বাঁধতে পারেনি। যা শুনে একেবারেই অবাক হয়ে জান গোটা গ্রামবাসী। স্নান করার এক মাসের মাথায় তাঁর এই মৃত্যু প্রশ্ন তুলে দিল গোটা দেশবাসীর কাছে। স্থানীয়রা হয়তো ভাবছেন, তাঁদের কাছে জলের আর এক নাম জীবন…কিন্তু, আমুর কাছে বোধ হয় জলের নাম মরণই ছিল!
আরও পড়ুন: Cyclone Sitrang: মাঝরাতেই বাংলাদেশে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং, অন্তত ১১ জনের মৃত্যু