ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে চারদিন ধরে যুদ্ধ চলছে। এই সংঘাত আপাতত থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এতে ইসরায়েলকে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ ব্যাপারে এবার সামনে এল ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। আফ্রিকার এ বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, মার্কিনরা গাজা সংঘাতে হস্তক্ষেপ করলে তারা ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাবে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে এ হুমকি দেয় হুথি (Houthi) বিদ্রোহীরা।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের হুথি নেতা আবদেল মালেক আল হুথি মঙ্গলবার বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি গাজা সংঘাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে তবে তারা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে প্রতিক্রিয়া জানাবে। একই সঙ্গে অন্যান্য সামরিক হামলার পরিকল্পনা করা হবে।গাজা চরম সংকটে রয়েছে জানিয়ে এ হুথি(Houthi) নেতা বলেন, হুথিরা অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় করতে এবং হস্তক্ষেপ করতে সব সময় প্রস্তুত।
তিনি বলেন, গাজার ক্ষেত্রে রেড লাইন আছে। অন্যান্য গ্রুপের সঙ্গে সমন্বয় করতেও তারা প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে।এদিকে গাজা ও লেবানন থেকে ইসরায়েলে নতুন করে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। গাজা থেকে রকেট ছোড়ার পর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর আশকেলনে সতর্কতা সংকেত বাজানো হয়।অন্যদিকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে লেবানন থেকেও হামালা চালানো হয়েছে। এসময় ইসারায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত শহরগুলোতে সাইরেন বাজানো হয়। তবে এঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
যুদ্ধ এরই মধ্যে পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। ইসরায়েল গাজার ২ শতাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছে। এই অবস্থায় ইরাকের সশস্ত্র সংগঠন কাতাইব হিজবুল্লাহ বা হিজবুল্লাহ ব্রিগেড, বদর অর্গানাইজেশন ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠন হুথি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে। প্রসঙ্গত, এই তিনটি সংগঠনেরই ইরানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে কথিত রয়েছে।
ইরাকের হিজবুল্লাহ ব্রিগেড হুমকি দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সহায়তা দিলে তাঁরা ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ব্যবহার করে স্পেশাল ফোর্সের মাধ্যমে হামলা চালাবে। যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাদের স্থাপনায় হামলার অভিযোগ এনেছিল। উল্লেখ্য, বর্তমানে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আড়াই হাজার ও সিরিয়ায় ৯০০ সেনা রয়ে গেছে।
এদিকে বদর অর্গানাইজেশনের নেতা হাজি আল-আমিরি বলেছেন, ‘যদি তাঁরা (যুক্তরাষ্ট্র) ইসরায়েলকে সহায়তা করে, তবে আমরাও ইরাকে তাদের স্থাপনায় হামলাকে বৈধ বলে বিবেচনা করব।’ উল্লেখ্য, বদর অর্গানাইজেশন ইরাকের রাষ্ট্রায়ত্ত আধাসামরিক বাহিনী পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের অংশ। এই আধা সামরিক বাহিনীতে অনেকগুলো ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে বলে দাবি পশ্চিমা বিশ্বের।
অন্যদিকে ইয়েমেনের বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো ধরনের হস্তক্ষেপের কড়া জবাব দেওয়া হবে। প্রয়োজনে হামাসের হয়ে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও অন্যান্য সামরিক উপায় অবলম্বন করে হামলা চালানো হবে। এমনকি হুথি ওই নেতা লেবানন ও ইরাকের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে জোট বেঁধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করারও হুমকি দিয়েছেন।